করোনা রোগীর লাশ উদ্ধার, ধারণা অমানবিক আচরণে ‘আত্মহত্যা’

ঝুলন্ত লাশ
প্রতীকী ছবি

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় আবদুর রাজ্জাক (৪৫) নামের একজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আলমডাঙ্গা থানার পুলিশ আজ রোববার সকালে উপজেলার গড়গড়ি গ্রামের বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। গরু ব্যবসায়ী রাজ্জাক করোনা রোগী হিসেবে আলাদা ঘরে আইসোলেশনে ছিলেন।

নাগরিক সংগঠন লোকমোর্চার আলমডাঙ্গা উপজেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক দেবেন্দ্রনাথ দোবে ওরফে বাবুলালের ভাষ্য, আবদুর রাজ্জাক করোনায় সংক্রমিত হয়ে আট দিন ধরে হোম আইসোলেশনে ছিলেন। আইসোলেশনে থাকার সময় পরিবারের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেছেন বলে তিনি দাবি করেন। দেবেন্দ্রনাথের ভাষ্য, এ কারণে রাজ্জাক আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।

আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর কবির বলেন, প্রতিষ্ঠিত গরু ব্যবসায়ী করোনায় সংক্রমিত হলে স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমতি নিয়ে হোম আইসোলেশনে ছিলেন। প্রতিবেশীদের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, ‘করোনাকালে বাড়ির লোকজন রাজ্জাকের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেন। তিনি পরিবারের সদস্যদের মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। কেউ তাঁর সঙ্গে দেখা করতেন না, কথা বলতেন না। এমন কী খাবার দেওয়ার সময় অনেক দূরে খাবার রেখে যেতেন। এসব নিয়ে প্রায়ই চিৎকার করে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করতেন। সেই ক্ষোভের জেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।’

তবে এ বিষয়ে আবদুর রাজ্জাকের পরিবারের কারও বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

এদিকে চুয়াডাঙ্গায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনায় মারা গেছেন পাঁচজন। এই নিয়ে জেলায় মৃত্যুর সংখ্যা ৮২। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে, করোনা শুরুর পর থেকে এক দিনে জেলায় এটিই সর্বোচ্চ মৃত্যু। নতুন শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ২৯ জনের বাড়ি দামুড়হুদা উপজেলায়। আর মৃতদের দুজন দামুড়হুদার, দুজন জীবননগরের ও একজন চুয়াডাঙ্গা সদরের।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত জেলার ৪টি উপজেলায় ১১ হাজার ৭৭৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৩১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ৫৯১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত ব্যক্তিদের প্রায় অর্ধেকের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায়। এ ছাড়া দামুড়হুদা উপজেলায় ৬৪৬ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৪২৪ জন ও জীবননগর উপজেলায় ২৯৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।