শরীয়তপুর
করোনা সুরক্ষার বেসিনে নেই পানি, পরিত্যক্ত
জেলার ২৮টি স্থানে বেসিন স্থাপন করা হয়েছিল। একেকটি বেসিনে বরাদ্দ ছিল ৩০ হাজার টাকা।
শরীয়তপুরে করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকে সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে হাত ধোয়ার বেসিন নির্মাণ করা হয়েছিল। বর্তমানে সেসব বেসিনে নেই পানির সংযোগ। সেগুলো কেউ ব্যবহার করেন না। সড়কের পাশে, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কার্যালয়ের পাশে বেসিনগুলো পরিত্যক্ত হয়ে আছে।
শরীয়তপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে তা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। একপর্যায়ে তা অতিমারিতে রূপ নেয়। মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সরকার নানা পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে ছিল জনসাধারণের ভিড় রয়েছে এমন স্থানে হাত ধোয়ার জন্য বেসিন স্থাপন। এর অংশ হিসেবে জেলার ২৮টি স্থানে বেসিন স্থাপন করা হয়। ৬ ফুট দৈর্ঘ্য ও আড়াই ফুট প্রশস্ত বেসিনে দুটি কল রাখা হয়। বেসিনের মেঝে ও দেয়ালে টাইলস বসানো হয়। আর পানিনিষ্কাশনের জন্য নিকটবর্তী নালায় (ড্রেন) পাইপলাইন স্থাপন করা হয়। যে কার্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের কাছে বেসিন স্থাপন করা হয়েছে, সেখান থেকে পানির সরবরাহ লাইন দেওয়া হয়। বর্তমানে ওই বেসিনগুলোতে পানির সংযোগ নেই। ফলে আর কেউ ব্যবহার করেন না।
শরীয়তপুর জেলা শহরের চৌরঙ্গী, সদর হাসপাতাল, আদালত এলাকার পুলিশ বক্স, উপজেলা পরিষদ চত্বর, ভূমি অফিস চত্বরসহ অন্তত ১৫টি স্থানে গিয়ে দেখা গেছে বেসিনগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। অনেক বেসিনে কল নেই, একটিতেও নেই পানির সংযোগ।
শরীয়তপুর শহরের কোর্ট এলাকার মুদিদোকানি ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, ‘করোনা শুরু হওয়ার পর হাত ধোয়া আমাদের অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। দোকানের কাছে বেসিন ছিল, তাই হাত ধুতে সুবিধা হতো। এখন বেসিন আছে, কিন্তু পানির লাইন নেই। তাই কেউ আর তা ব্যবহার করেন না।’
শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল চত্বরের জরুরি বিভাগের দেয়াল ঘেঁষে একটি বেসিন বসানো হয়েছে। সেই বেসিনের দুটি কলই নষ্ট। পানির সরবরাহ নেই। বেসিনের ওপর ময়লার স্তূপ।
এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুমন কুমার পোদ্দার বলেন,‘
হাসপাতাল ভবনের বাইরে বসানো বেসিনে আমাদের নজরদারি নেই। আর ওটার প্রয়োজনীয়তাও কেউ বলেনি। বেসিনটি সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করা হবে।’
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের শরীয়তপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেন, একেকটি বেসিন স্থাপনের জন্য বরাদ্দ ছিল ৩০ হাজার টাকা। যেখানে স্থাপন করা হয়েছে, সেখান থেকেই পানির সরবরাহ করার কথা ছিল। তাঁরা হয়তো বিষয়টিতে উদাসীন ছিলেন। তাই এমন হয়েছে।