রাজবাড়ীতে চারলেন
কাজ শেষ হয়নি ৫ বছরেও
সড়কটির চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের ২৬ জুন।
রাজবাড়ী শহরের পৌর এলাকায় চার কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ শেষ করার কথা ছিল দেড় বছরের মধ্যে। পাঁচ বছর হতে চলল, কাজ এখনো শেষ হয়নি। কাজ শেষ করার সময়সীমা এরই মধ্যে চারবার পেছানো হয়েছে। পঞ্চমবারের মতো এই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। দুর্ভোগ নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে পথচারীদের। এই ভোগান্তির শেষ চান তাঁরা।
রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়কের যথাযথ মান ও প্রশস্ততা উন্নীতকরণ প্রকল্পের (গোপালগঞ্জ অঞ্চল) আওতায় রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। পৌরসভার চার কিলোমিটার সড়ক হবে চার লেনবিশিষ্ট। রাস্তার মাঝখানে চার ফিটের একটি সড়ক বিভাজক থাকবে। আর উভয় পাশে রাস্তা থাকবে ২৯ ফুট করে।
শ্রীপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে চরলক্ষ্মীপুর আহমদ আলী মৃধা কলেজ এলাকা পর্যন্ত সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজটি করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেকটা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড ও ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন। ২০১৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর প্রকল্পটির কার্যাদেশ দেওয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২৬ জুন কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। এ ছাড়া রাস্তার দুই পাশে ড্রেন নির্মাণ করা হবে। কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০ কোটি টাকা।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের শ্রীপুর বাস টার্মিনাল থেকে বড়পুল মোড় পর্যন্ত উভয় পাশে রাস্তার মূল কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বড়পুল কাজী হেদায়েত হোসেন স্টেডিয়াম থেকে চরলক্ষ্মীপুর পর্যন্ত রাস্তার এক পাশ (কুষ্টিয়া যাওয়ার সময় হাতের বাঁ দিক) পাকা করা হয়েছে। চরলক্ষ্মীপুরের তালতলা এলাকায় ড্রেনের কাজ শুরু হয়েছে। খননযন্ত্র দিয়ে রাস্তা খোঁড়া হচ্ছে। কিছুদূর পরপর রাস্তা ও ড্রেনের মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি দাঁড়িয়ে রয়েছে। খুঁটিগুলোর আগে ও পরে ড্রেন তৈরি করা হচ্ছে। পুলিশ লাইনস মোড় এলাকায় রাস্তা এবড়োখেবড়ো হয়ে আছে। রাস্তার কালো পিচ উঁচু ঢিবির মতো হয়ে আছে।
বড়পুল এলাকার বাসিন্দা আইনজীবী অভিজিৎ কুমার বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ততম সড়ক। কাজ শেষ না হওয়ায় স্থানীয় লোকজনকে ধুলাবালুর মধ্যে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এক লেন দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
স্পেকটা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড ও ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনের স্থানীয় প্রতিনিধি আওয়ামী লীগের নেতা আমজাদ হোসেন বলেন, রাস্তার দুই পাশে ড্রেন তৈরি করতে সমস্যা হচ্ছিল। এ কারণে কাজ করতে কিছু দেরি হয়েছে। তবে আশা করা যায় এবার মে মাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা যাবে।
রাস্তার কাজ ৭৪ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নওয়াজিস রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত কাজের মেয়াদ চারবার বাড়ানো হয়েছে। সবশেষ মেয়াদ ছিল ৩১ মার্চ পর্যন্ত। তিনি ফেব্রুয়ারি মাসে যোগদান করেছেন। এ কারণে কাজ সম্পন্ন হতে এত দেরি হওয়ার কারণ বলতে পারছেন না বলে জানালেন সওজের এই কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জুন মাস পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছে। নভেম্বর মাস থেকে রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রড–সিমেন্টের দাম বাড়ার কারণ দেখিয়েছিল। কিছুদিনের মধ্যে আবার কাজ শুরু করার কথা।