কাদের মির্জার বিরুদ্ধে পৌর ভবনে ব্যবসায়ীকে আটকে রাখার অভিযোগ

বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা
ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভা ভবনে এক ব্যবসায়ীকে প্রায় সাত ঘণ্টা আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে সোমবার বেলা একটার দিকে বসুরহাট জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে তাঁকে তুলে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

আটকে রাখা ব্যবসায়ীর নাম রূপক মজুমদার (৪২)। তিনি বসুরহাট বাজারের এইচ আর সিটি কমপ্লেক্স বিপণিবিতানের সাথী টেলিকমের মালিক। পরে রাত পৌনে আটটার দিকে কোম্পানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ রূপক মজুমদারকে উদ্ধার করে প্রথমে থানায় নেন। পরে সেখান থেকে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

অভিযোগের বিষয়ে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জার মুঠোফোনে সোমবার সন্ধ্যায় একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে তাঁর মুঠোফোনে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে খুদে বার্তা পাঠানো হয়। খুদে বার্তার জবাবে জানানো হয়, ‘একজন হিন্দুর বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা মামলা করিয়েছেন রূপক। তাই তাঁকে জিজ্ঞেস করতে ডাকা হয়েছে। কোনো আটক বা তুলে আনা হয়নি।’

এইচ আর সিটি কমপ্লেক্স বিপণিবিতানের (মার্কেট) মালিক মো. মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বেলা একটার দিকে তাঁর বিপণিবিতানের ব্যবসায়ী রূপক মজুমদার দোকান থেকে বের হন। এরপর বসুরহাট বাজারের জিরো পয়েন্ট এলাকা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও তাঁর অনুসারীদের সামনে পড়েন। মেয়র তাঁর অনুসারীদের নির্দেশ দেন রূপককে তুলে নিয়ে পৌরসভায় আটকে রাখার জন্য। তাৎক্ষণিক তাঁকে তুলে নিয়ে যান মেয়রের অনুসারীরা।

সন্ধ্যা ৬টা ৯ মিনিটে ব্যবসায়ী রূপক মজুমদারের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি ধরেন। তাঁকে বেঁধে রাখা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে ‘না’–সূচক জবাব দেন। পাল্টা প্রশ্নে তাঁকে সেখানে কীভাবে রাখা হয়েছে, জানতে চাইলে ফোনের সংযোগ কেটে দেওয়া হয়। এরপর একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও আর ধরেননি।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ রোমেন প্রথম আলোকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বলেন, ‘আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ পরে রাত পৌনে আটটায় বলেন, ‘আমি শুনেছি, প্রায় আধা ঘণ্টা আগে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’ পরবর্তী সময়ে পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ ব্যবসায়ী রূপককে উদ্ধারের বিষয়ে পুনরায় ফোন দিলে ওসি বলেন, ‘আমি মিটিংয়ে আছি, পরে কথা বলেন।’

রাত সাড়ে আটটার দিকে কোম্পানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি মিটিংয়ে আছেন। ব্যবসায়ী রূপক থানায় আছেন।