কুমারখালীতে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, স্বামী গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে যৌতুকের দাবি করে না পেয়ে সোনালী খাতুন (২২) নামের এক গৃহবধূকে তাঁর স্বামী পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের সোন্দাহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ শনিবার সকালে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বজনেরা মামলা করার পর স্বামী শফিকুল ইসলামকে (২৬) গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তার আগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে আটক করেছিল পুলিশ।

অভিযুক্ত স্বামী শফিকুল ইসলাম ওই গ্রামের সিরাজ আলীর ছেলে। আর সোনালী খাতুন উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের নগর সাওতা গ্রামের আনিস উদ্দিনের মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় চার বছর আগে শফিকুলের সঙ্গে সোনালীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময় সোনালীকে শফিকুল মারধর করতেন বলে অভিযোগ ওঠে। যৌতুকের টাকা না পেয়ে গতকাল রাতে সোনালীকে নির্যাতন করেন তাঁর স্বামী। পরে আজ সকালে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে। ওই গৃহবধূর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

সোনালীর ভাই উজ্জ্বল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘যৌতুকের টাকার জন্য আমার বোনকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। শফিকুল মাদকাসক্ত। আমার বোনকে হত্যার জন্য তাঁর ফাঁসি চাই। এ ব্যাপারে থানায় মামলা করা হয়েছে।’

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, যৌতুকের টাকা না পেয়ে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। মামলায় স্বামী শফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে আরও দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে শফিকুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগেই আটক করা হয়েছিল। তাঁকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। শফিকুল মাদকাসক্ত কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে তাঁকে দেখে এমন মনে হয়নি। তবে পরে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

সোনালীর শাশুড়ি হালিমা খাতুন বলেন, ভোরে ছেলের ঘরে উচ্চ স্বরে শব্দ শুনতে পান। ডাকাডাকি করে না খুললে প্রতিবেশীদের খবর দেন। পরে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে গিয়ে দেখতে পান অচেতন হয়ে শুয়ে আছেন সোনালী। তাঁর নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। তাঁর দাবি, শফিকুল তাঁকে মারেননি। তাঁর ছেলের বউ স্ট্রোকে মারা গেছেন।