কোভিড হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যু, খবর শুনে মারা গেলেন মা

কুমিল্লা কোভিড হাসপাতালের করোনা ইউনিট
ফাইল ছবি

কুমিল্লা কোভিড হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার ১২ ঘণ্টা পর সেই নবজাতক মারা গেছে। এ খবর শোনার ১০ মিনিটের মাথায় ওই মা–ও মারা গেছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে ওই নবজাতক ভূমিষ্ঠ  হয়। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে নবজাতকটি মারা যায়।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অবস্থিত কোভিড হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ওই নারীর নাম ফারজানা আক্তার (২৭)। তিনি জেলার বরুড়া উপজেলার আদ্রা ইউনিয়নের হরিশপুরা গ্রামের প্রবাসী সোহেল পাটোয়ারী স্ত্রী। ফারজানা কয়েক দিন আগে প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছেন। লাশ দাফনকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিবেক কুমিল্লার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইউসুফ মোল্লা টিপুর নেতৃত্বে একদল সদস্য করোনা প্রটোকল মেনে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেন।

কয়েক দিন আগে সন্তানসম্ভবা ফারজানা সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরেন। এরপর তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৭ মে কুমিল্লা কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হন।

পরিবার ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, সোহেল পাটোয়ারী স্ত্রী ফারজানা আক্তারকে নিয়ে সৌদি আরব থাকতেন। কয়েক দিন আগে সন্তানসম্ভবা ফারজানা দেশে ফেরেন। এরপর তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৭ মে কুমিল্লা কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হন। এরই মধ্যে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী গতকাল সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। জন্মের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই শিশুকে মায়ের কাছ থেকে পৃথক করার জন্য নির্দেশ দেয়। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা তাকে অন্যত্র স্থানান্তর করেননি। এ অবস্থায় আজ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে নবজাতকটি মারা যায়। ওই খবর পাওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে মা ফারজানাও মারা যান।

হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘ফারজানা নামের অন্তঃসত্ত্বা রোগী করোনা পজিটিভ ছিলেন। সাত মাসে তাঁর সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। পরে শিশুটিকে বিশেষায়িত হাসপাতালে (এনআইসিইউ) নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু পরিবারটি সেই উদ্যোগ নেয়নি। ফলে নবজাতক মারা যায়। এরপর মা–ও মারা যান।’