কুলিয়ারচরে জুতার দামদর নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রাণ হারালেন এক ব্যক্তি

হত্যা
প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে জুতার দামদর নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে সুজন মিয়া (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার বিকেলে সুজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত শনিবার সন্ধ্যায় কুলিয়ারচর বাজারে মনির হোসেনের (১৭) দোকানে রবিন মিয়া নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে মনিরের জুতার দামদর নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মনির ও রবিনের বাড়ির লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আজ বিকেল পর্যন্ত দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।

নিহত সুজন মিয়া পূর্ব গাইলকাটা এলাকার হিসাদ মিয়ার ছেলে। তিনি জুতার দোকানি মনির হোসেনের পক্ষের বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ৪টি বাস, ১৫টি দোকান ও কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে আটক করে। তবে পুলিশ আটক ব্যক্তিদের পরিচয় প্রকাশ করেনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যায় পৌর শহরের তাতারকান্দি এলাকার রবিন কুলিয়ারচর বাজারে মনির হোসেনের দোকানে জুতা কিনতে যান। এ সময় মনির জুতার দাম হাঁকেন ৭০০ টাকা। এর বিপরীতে রবিন দাম বলেন ৪০০ টাকা। একপর্যায়ে দামদর নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রাত আটটার দিকে রবিন ও মনিরের বাড়ির লোকজন দা, বল্লম ও লাঠি নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় বাজারের কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করা হয়। এর মধ্যে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বাজার এলাকায় দুই পক্ষকে নিয়ে সালিস হয়। কুলিয়ারচর বাজার সমিতির সভাপতি মুফতি ইলিয়াস মাহমুদ কাসেমী সালিসে সভাপতিত্ব করেন।

সালিসের শেষ পর্যায়ে আবার দুই পক্ষের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। পরে দুই পক্ষ আবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। গতকাল সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। আজ দুপুরের পর আবার দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় সুজন গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে আহত অবস্থায় সুজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে গাইলকাটা এলাকার লোকজন বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে চারটি যাত্রীবাহী বাস ও একটি ট্রাক্টর ভাঙচুর করে।

এ বিষয়ে রবিন বলেন, ‘আমি ক্রেতা। জুতা কিনতে গেছি। দাম আমি বলতেই পারি। কেন কম বললাম, এ জন্য আমাকে ধাক্কা দিয়ে মনির দোকান থেকে বের করে দেন।’

অভিযোগের বিষয়ে মনির হোসেনের ভাষ্য, তিনি কম দামে জুতা বিক্রি করতে চাননি। কিন্তু রবিন কম দামে বিক্রি করতে চাপ দিচ্ছিলেন। তখন দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়েছিল।

জানতে চাইলে কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তুফা বলেন, এক জুতা নিয়ে কয়েক দফা সংঘর্ষ চলেছে। পুলিশ একাধিকবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে শান্ত করেছে। এর মধ্যে একজন প্রাণ হারালেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।