কয়রায় মা–বাবা ও মেয়েকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার তিনজন রিমান্ডে

আদালত
প্রতীকী ছবি

খুলনার কয়রা উপজেলার একটি পুকুর থেকে একই পরিবারের তিন সদস্যের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন নিহত হাবিবুল্লাহ গাজীর প্রতিবেশী জিয়াউর রহমান (৪১), সুলতানা গাজী (৩৮) ও মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের ভাগবা গ্রামের আবদুল খালেক (৬৫)। গত মঙ্গলবার সকালে পুকুর থেকে লাশ উদ্ধারের পর দুপুরের দিকে কয়েকজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়রা থানায় ডেকে নেয় পুলিশ। এর মধ্যে জিয়াউর রহমান ও সুলতানা গাজী ছিলেন। পরে অন্য একটি সূত্র ধরে আবদুল খালেককে থানায় ডেকে নেওয়া হয়। এক দিন আটকে রাখার পর গতকাল বুধবার ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুল ইসলাম।

জানতে চাইলে আসাদুল ইসলাম বলেন, অনেক পরিকল্পনা করে খুব ঠান্ডা মাথায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। অপরাধীরা সব ধরনের আলামত নষ্ট করে ফেলেছেন। এ কারণে আসামিদের গ্রেপ্তার ও মূল কারণ উদ্‌ঘাটন বেশ জটিল হয়ে পড়েছে। তারপরও প্রাথমিকভাবে কয়েকটি ধারণা নিয়ে মামলার তদন্ত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থেই ওই তিনজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, অনেক পরিকল্পনা করে খুব ঠান্ডা মাথায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। অপরাধীরা সব ধরনের আলামত নষ্ট করে ফেলেছেন। এ কারণে আসামিদের গ্রেপ্তার ও মূল কারণ উদ্‌ঘাটন বেশ জটিল হয়ে পড়েছে।

গত মঙ্গলবার সকালে খুলনার পাইকগাছা-কয়রা প্রধান সড়কের পাশে বাগালী ইউনিয়ন পরিষদের পাশের একটি পুকুরে একই পরিবারের মা–বাবা ও মেয়ের লাশ ভাসতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশকে খবর দিলে সকাল সাড়ে আটটার দিকে লাশ তিনটি উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ব্যক্তিরা হলেন ওই এলাকার হাবিবুল্লাহ গাজী (৩০), তাঁর স্ত্রী বিউটি খাতুন (২৬) ও মেয়ে হাবিবা খাতুন ওরফে টুনি (১৩)। আশপাশে বসতিহীন ওই বাড়িতে তাঁরা তিনজনই থাকতেন। হাবিবুল্লাহ ছিলেন দিনমজুর। আর বিউটি খাতুন ছিলেন গৃহিণী। মেয়ে হাবিবা পড়ত সপ্তম শ্রেণিতে।

এর মধ্যে হাবিবুল্লাহ গাজীর হাত-পা বাঁধা ছিল। মুখে ও মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্নও ছিল। বিউটি খাতুনের গলায় দড়ি দিয়ে শ্বাস রোধ করার এবং মেয়ে হাবিবার কপালে ও মুখে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। পুকুরের মধ্যে রক্তমাখা কাঁথা-বালিশ পাওয়া যায়। আর বাড়ির পাশের এক নালায় পাওয়া গিয়েছিল রক্তমাখা কাপড়চোপড়।

ওই ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই নিহত হাবিবুল্লাহর মা কোহিনুর খানম অজ্ঞাতনামা আসামি করে কয়রা থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, তিনি অন্য ছেলের বাড়িতে থাকতেন। ঘটনার আগের দিন সোমবার সন্ধ্যায় তিনি হাবিবুল্লাহর বাড়িতে গিয়েছিলেন। পরে চলে আসেন। তখন পর্যন্ত অস্বাভাবিক কোনো কিছু দেখেননি। সকালে পুকুরে লাশ ভাসতে দেখার কথা শুনে আবার ওই বাড়িতে যান। কেন কী কারণে ছেলে, ছেলের বউ ও নাতনিকে হত্যা করা হয়েছে, তা বুঝতে পারছেন না।