খাদ্যসহায়তা চেয়ে উল্টো শাস্তি: কাজ শুরু করেছে তদন্ত কমিটি

ফরিদ আহমেদ কাঁদতে কাঁদতে সদরের ইউএনও আরিফা জহুরাকে বলছিলেন যে করোনায় তাঁর আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে।
প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জে ৩৩৩ নম্বরে ফোন দিয়ে সরকারি ত্রাণসহায়তা চেয়ে উল্টো শাস্তি পাওয়ার ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি। তদন্ত শেষে ২৬ মে (বুধবার) প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শামীম ব্যাপারী।

গত বুধবার ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্যসহায়তা চান সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের দেভোগ এলাকার ফরিদ উদ্দিন। সদর উপজেলা প্রশাসনের ভাষ্য, খাদ্যসহায়তা করতে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, ওই ব্যক্তি চারতলা বাড়ির মালিক এবং তিনি হোসিয়ারি কারখানার মালিক। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরা তাঁকে ৩৩৩ ফোন করে অযথা হয়রানি ও সরকারি সময় নষ্ট করার দায়ে শাস্তি হিসেবে ১০০ গরিব লোককে খাদ্যসহায়তা করার জন্য দুই দিন সময় বেঁধে দিয়ে আসেন।

যদিও পরে জানা যায়, ফরিদ আহমেদের এক ছেলে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী, দুই মেয়ে রয়েছে। তিনি একটি হোসিয়ারি কারখানায় পাঁচ-ছয় হাজার টাকা বেতনের কাজ করেন। পরে ফরিদ আহমেদ তাঁর বড় মেয়ের স্বর্ণালংকার বন্ধক রেখে চড়া সুদে ঋণ করে ও ধার করে ১০০ প্যাকেট খাদ্য জোগাড় করলে ইউএনওর উপস্থিতিতে সেগুলো বিতরণ করা হয়। ফরিদ আহমেদের এই হয়রানির ঘটনা জানাজানি হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন।

আরও পড়ুন

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক শামীম ব্যাপারী সাংবাদিকদের বলেন, ৩৩৩ নম্বরে ফোন পেয়ে ইউএনও খাদ্যসহায়তা দিতেই তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে কোনো ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেননি তিনি। পরে ইউএনও ফরিদ আহমেদ সচ্ছল জানতে পেরে তাঁকে ১০০ গরিব লোককে খাদ্য বিতরণ করতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

তবে ফরিদ আহমেদের চারতলা বাড়ির মালিক এবং তিনি সচ্ছল, এই বিষয়টি নিয়ে ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছে দাবি করে তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, আপাতত বিষয়টির সমাধান হয়েছে। ফরিদ আহমেদকে সমাজের বিত্তবানদের একজন সেই খাদ্য বিতরণের টাকা ফেরত দিয়েছেন। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে ফরিদ আহমেদের কোনো অভিযোগ নেই। তদন্ত কমিটি তদন্ত শেষে বুধবার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।