খাল খনন করায় সড়কে ধস

শরীয়তপুরে দাদপুর-লক্ষ্মীপুর সড়কের বিভিন্ন অংশ ধসে পড়েছেসাম্প্রতিক ছবি। প্রথম আলো

এক বছর ধরে সড়কটির বিভিন্ন অংশ ধসে পড়ছে। এতে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করার সময় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকাবাসী। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ দুরবস্থা শরীয়তপুর সদর উপজেলার দাদপুর-লক্ষ্মীপুর সড়কের।

২৩ এপ্রিল বিকেলে দক্ষিণ ভাষানচর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ওই সড়কের এক পাশে ফসলি জমি ও মানুষের বসতবাড়ি। অপর পাশে খাল। খালের পাশের ২০০ মিটার অংশে ফাটল সৃষ্টি হয়ে ধসে পড়েছে। এর আগে গত বছর আরও ২০০ মিটার অংশ খালে ধসে পড়ে। সড়কের ওই অংশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ভ্যান-রিকশা চলাচল করছে।

এলজিইডি শরীয়তপুর কার্যালয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুর জেলা শহরের সঙ্গে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা, মাদারীপুরের সদর ও কালকিনির বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াতের জন্য আংগারিয়া-সুবচনি সড়ক রয়েছে। ওই সড়কের দাদপুর এলাকা থেকে দাদপুর-লক্ষ্মীপুর সড়ক পাকা করার উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যায়ে দাদপুর-লক্ষ্মীপুর সড়কের আড়াই কিলোমিটার পাকা করা হয়। ওই সড়কের পাশ দিয়ে একটি খাল প্রবাহিত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে গত বছর ওই খাল খনন করা হয়। খনন করার পরই সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। গত বছর দক্ষিণ ভাষানচর এলাকায় সড়কের ২০০ মিটার খালে ধসে পড়ে। ১৫ দিন ধরে আবার ওই এলাকায় সড়ক ধসে যাচ্ছে। ১৫ দিনে সড়কের আরও ২০০ মিটার ধসে পড়েছে। সড়কটির এ খারাপ অবস্থার কারণে প্রতিদিন ১০-১২ হাজার মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছে।

শরীয়তপুর সদর উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামের বাসিন্দা রোকসানা আক্তার একটি বেসরকারি সংস্থার মাঠকর্মী। প্রতিদিন তিনি এ সড়ক দিয়ে জেলা শহরে যাতায়াত করেন। রোকসানা আক্তার বলেন, ‘তিন বছর আগে সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু এখনই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে। সড়কটি যেভাবে ধসে গেছে, তাতে বেশি দিন চলাচল করতে পারব না। এখনই ওই অংশ অতিক্রম করার সময় অটোরিকশা থেকে নেমে যেতে হয়।’

শরীয়তপুর ও মাদারীপুরের বিভিন্ন গ্রামের হাটে গবাদিপশু বেচাকেনা করেন লক্ষ্মীপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন সরদার। ছোট গাড়িতে করে সড়কটি ব্যবহার করে গরু-ছাগল আনা-নেওয়া করতেন। এক বছর ধরে সড়কটি দিয়ে পিকআপ ভ্যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

আংগারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর দাদপুর-লক্ষ্মীপুর সড়কের পাশের খালটি খনন করা হয়। তখনই সড়কে ফাটল দেখা দেয়। সড়কটি সংস্কার করার উদ্যোগ নিতে উপজেলা প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলীকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

সদর উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, দাদপুর-লক্ষ্মীপুর সড়কে ধসের তথ্য তাঁর কাছে এসেছে। সড়কটি সংস্কার করতে কিছু সময় নিতে হবে। কারণ, জরুরি ভিত্তিতে কাজ করার বরাদ্দ হাতে নেই।