খুলনায় বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন

কারাদণ্ড
প্রতীকী ছবি

খুলনার রূপসা উপজেলার পিঠাভোগ গ্রামে বাবা প্রফুল্ল বিশ্বাসকে (৬২) হত্যার দায়ে ছেলে প্রশান্ত বিশ্বাসকে (৪০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ২ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক তাসনিম জোহরা এই রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নব কুমার চক্রবর্তী বলেন, নিহত প্রফুল্ল বিশ্বাস কৃষিকাজ ও ধর্মীয় গান করতেন। তাঁর দুই ছেলে। বড় ছেলে প্রশান্ত দরজির কাজ ও অন্যজন ফরিদপুর জেলায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। ছেলেদের দুজনের কেউ বিয়ে করেননি। বড় ছেলে প্রশান্ত বিশ্বাস বিয়ের জন্য মা-বাবাকে চাপ দিতেন। এ নিয়ে তাঁদের পরিবারে প্রায়ই কলহ হতো। কলহের জেরে ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মাকে মারতে উদ্যত হন প্রশান্ত। পরের দিন মা পাশের গ্রামে মামার বাড়িতে চলে যান। ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালাতে গিয়ে পাশের বাড়ির সুভদ্রা বিশ্বাস নামের এক নারী প্রফুল্ল বিশ্বাসের গলাকাটা লাশ দেখে চিৎকার দেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় প্রফুল্ল বিশ্বাসের ছোট ছেলে সুশান্ত বিশ্বাস বাদী হয়ে বড় ভাই প্রশান্ত বিশ্বাসকে আসামি করে রূপসা থানায় হত্যা মামলা করেন। এরই মধ্যে প্রশান্ত বিশ্বাস বেনাপোল বন্দর হয়ে ভারতে চলে যান। সেখানে পশ্চিম বশিরহাটের একটি দোকানে দরজির কাজ শুরু করেন। সেখান থেকে বনগাঁ গিয়ে কাজ করতে থাকেন। তিন মাস পর অনুশোচনায় ভুগে দেশে ফিরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন প্রশান্ত। তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন।

একই বছরের ১২ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মাহফুজুল হক আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদালত এই রায় দেন।