খুলনায় স্ত্রীকে হত্যার অপরাধে স্বামীর ফাঁসি

প্রতীকী ছবি

খুলনায় স্ত্রী মিনা রানী পোদ্দারকে হত্যার দায়ে স্বামী পরিমল বাইনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। খুলনা সিনিয়র দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী আজ রোববার দুপুরে ওই রায় দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এনামুল হক বলেন, মামলায় দুজন আসামি ছিলেন। এর মধ্যে এক আসামি খুন হওয়ায় তাঁকে ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আর পরিমল বাইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে পরিমল বাইন পলাতক। মামলায় ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি পরিমল বাইনের বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায়। মিনা পোদ্দার তাঁর চতুর্থ স্ত্রী ছিলেন। মিনা পোদ্দারের বাবার বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায়। দুজন খুলনা নগরে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। মিনা পোদ্দারকে দিঘলিয়ায় বেড়াতে নিয়ে গিয়ে খুন করে লাশ ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ১৬ এপ্রিল সকালে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার পদ্মবিলা ও বামনডাঙ্গা বিলের মাঝে আত্রাই নদের সংযোগস্থলে মস্তকবিহীন এক অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুপুরের দিকে মরদেহের পরিচয় না পাওয়ায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দিঘলিয়া থানায় মামলা করেন ওই থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. আবদুল মজিদ। পরে লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

প্রথম দফায় মামলাটি তদন্ত করেন ওই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান। কিন্তু তদন্তে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় পরে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মীর আতাহার আলী তদন্ত করে মিনা পোদ্দারের স্বামী পরিমল বাইন ও টিপু শেখ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পরিমল বাইন তাঁর স্ত্রী হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন। ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন তিনি।

জবানবন্দিতে পরিমল বাইন বলেন, মিনা পোদ্দারের আগে তিনি তিনটি বিয়ে করেছিলেন। একাধিক বিয়ের ঘটনা জেনে যাওয়ায় স্ত্রী মিনা পোদ্দার তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন। এ কারণে তাঁকে হত্যার জন্য ১০ হাজার টাকায় ভাড়া করা হয় দিঘলিয়া এলাকার টিপু সুলতানকে। ১৩ এপ্রিল রাতে মিনা পোদ্দারকে নিয়ে টিপু সুলতানের বাড়ি যাওয়ার পথে মিনা পোদ্দারের মাথা কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করে পাশের ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়।

ওই ঘটনায় ২০১৭ সালের ২০ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিমল বাইন ও টিপু সুলতানকে আসামি করে আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন। বিচার চলাকালে ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর আসামি টিপু সুলতানের মৃত্যু হওয়ায় তাঁকে ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।