খুলনা বিভাগে করোনা শনাক্তে নতুন রেকর্ড, মৃত্যু কমেছে

নেহার বেগমের অক্সিজেন সেচুরেশন অনেক কমে গেলে তাঁকে আইসিইউতে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়। শয্যা ফাঁকা নেই, তাই অ্যাম্বুলেন্সে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন স্বজনেরা। শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল, খুলনা।ছবি: সাদ্দাম হোসেন

খুলনা বিভাগে করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৮৬৫ জনের। বিভাগে এখন পর্যন্ত এটাই এক দিনে সর্বোচ্চ করোনা শনাক্তের সংখ্যা।

এর আগে গতকাল সোমবার এক দিনে সর্বোচ্চ ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। একই সময়ে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪৭০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে আজ মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ২৪ ঘণ্টায় আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে ১ হাজার ৯৫২টি, জিন এক্সপার্টে ১৪৬টি, র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় ২ হাজার ৯৬৮টিসহ মোট ৫ হাজার ৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এটাই এক দিনে সর্বোচ্চসংখ্যক নমুনা পরীক্ষা। শনাক্তের হার ৩৬ দশমিক ৮১ শতাংশ। আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৩৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

খুলনায় প্রতিদিনই চাহিদা বাড়ছে অক্সিজেনের। অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ফাঁকা সিলিন্ডার নিয়ে যাচ্ছে ভর্তি করতে। সোনাডাঙ্গা, খুলনা।
প্রথম আলো

বিভাগের মধ্যে মাগুরা জেলায় শনাক্তের হার সর্বোচ্চ, ৫৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এরপর খুলনায় শনাক্তের হার ৪৩ দশমিক ৯ এবং সর্বনিম্ন শনাক্তের হার সাতক্ষীরায়, ২৬ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, করোনায় মারা যাওয়া সর্বশেষ ৪০ জনের মধ্যে খুলনার ১৪ জন, কুষ্টিয়ার ১৩ জন, যশোরের ৬ জন, মেহেরপুরের ৩ জন, বাগেরহাট, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও সাতক্ষীরায় একজন করে আছেন।

এ নিয়ে বিভাগে করোনা সংক্রমিত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩০৫। মৃত্যুর হার ২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। বিভাগে করোনা শনাক্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ৮৯৯। গত বছরের ১৯ মার্চ বিভাগে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কুষ্টিয়ায় শনাক্ত হয়েছে সর্বোচ্চ ৪৩২ জন। এ ছাড়া খুলনায় শনাক্ত হয়েছে ৩৪৯ জন, বাগেরহাটে ১২৭ জন, সাতক্ষীরায় ১১৩ জন, যশোরে ২৭৯ জন, নড়াইলে ৭৩ জন, মাগুরায় ৪৭ জন, ঝিনাইদহে ২৩০ জন, চুয়াডাঙ্গায় ১৪০ জন এবং মেহেরপুরে ৭৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

খুলনায় করোনা চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিভাগের সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এর গতি কোথায় গিয়ে থামবে, সেটা এখনই বলা কঠিন। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যার রেকর্ড হয়েছে। শনাক্তের হারও কমছে না। এতে পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে বলেই ইঙ্গিত মিলছে। আবার চলতি লকডাউনের প্রথম দিকে কড়াকড়ি থাকলেও আস্তে আস্তে বেশ শিথিল ভাব দেখা যাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি না মানলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।