খুলনা বিভাগে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ১৫০ ছাড়াল

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত
ফাইল ছবি

খুলনা বিভাগে কয়েক দিন ধরে করোনা শনাক্তের হার ১০-এর আশপাশে আছে। করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমে এলেও দুই সপ্তাহে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। খুলনা বিভাগের বিভিন্ন উপজেলায়ও ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে।

জানুয়ারি থেকে আজ শুক্রবার পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় ডেঙ্গু শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়েছে। তবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত কোনো শয্যা খালি নেই।

খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় থেকে জানা যায়, বছরের প্রথম সাড়ে সাত মাসে (জানুয়ারি থেকে ১৫ আগস্ট) ডেঙ্গু শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ৫০। পরের ১৪ দিনে আরও ৫০ জনের ডেঙ্গু জ্বর শনাক্ত হয়। এ ছাড়া গত ১১ দিনে ৫৩ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। এ নিয়ে আজ সকাল পর্যন্ত বিভাগে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫৩। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সাত ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সব মিলিয়ে বিভাগে বর্তমানে ২৫ জন ডেঙ্গু নিয়ে চিকিৎসাধীন। ২৫ জনের মধ্যে খুলনার হাসপাতালে ১১ জন, মেহেরপুর ও নড়াইলের হাসপাতালে ৩ জন করে, যশোর ও ঝিনাইদহে ২ জন করে এবং কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, বাগেরহাট ও মাগুরায় ১ জন করে চিকিৎসাধীন।

চলতি বছর খুলনা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ৪৬ জন। এরপর যশোরের হাসপাতালে ৪১ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এ বছর ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১২৩ জন হাসপাতাল ছেড়েছেন। ৯ আগস্ট সাইফুল ইসলাম (৩৬) নামের এক যুবক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে খুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁর বাড়ি খুলনা নগরের সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার শেখপাড়ায়। এটাই এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে চলতি বছরের একমাত্র মৃত্যুর ঘটনা। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত চারজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় ও বিভাগীয় শহরের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, ২০১৯ সালে খুলনা বিভাগে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা রেকর্ড ছিল। ওই বছর বিভাগে ১১ হাজার ৪৭৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন এবং মৃত্যু হয় ৩৯ জনের। একই বছর খুলনা জেলায় ২ হাজার ৯৫ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ২৬ জন। এদিকে গত বছর বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ১০৪ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১ জন।

খুলনা মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও হাসপাতালের ডেঙ্গু ইউনিটের মুখপাত্র উৎপল কুমার চন্দ প্রথম আলোকে বলেন, তিন সপ্তাহে ডেঙ্গু রোগী সামান্য বেড়েছে। হাসপাতালে আপাতত ১০ শয্যার ডেঙ্গু ইউনিট খোলা আছে। বর্তমানে হাসপাতালে ডেঙ্গু ইউনিটের সব শয্যাই পূর্ণ। তবে ইউনিটের মধ্যে জায়গা আছে। রোগী এলে সেখানেই আরও পাঁচ-সাতটা শয্যার ব্যবস্থা করা যাবে। এ সময়ে কারও জ্বর হলে দেরি না করে কোভিড ও ডেঙ্গু দুটি পরীক্ষাই করিয়ে নিতে হবে।