গণবদলিতে চমেকে সংকটে করোনার নমুনা পরীক্ষা

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
ফাইল ছবি

হঠাৎ করে চিকিৎসকদের গণবদলিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) আরটি–পিসিআর ল্যাবে করোনার নমুনা পরীক্ষায় সংকট দেখা দিয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় চমেকের ১৫৬ জন শিক্ষককে বিভিন্ন হাসপাতালে বদলি করা হয়। এর মধ্যে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ছয়জন শিক্ষক রয়েছেন। বর্তমানে বিভাগটিতে চিকিৎসক রয়েছেন চারজন। এই জনবল দিয়ে আরটি–পিসিআর ল্যাবের পাশাপাশি অন্যান্য সেবা দেওয়া অসম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) আরটি–পিসিআর ল্যাব করোনার নমুনা পরীক্ষায় শুরু থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।

কোভিড মোকাবিলায় গঠিত স্বাচিপের বিভাগীয় সমন্বয়ক ও সাংগঠনিক সম্পাদক আ ম ম মিনহাজুর রহমান বলেন, চমেক আরটি–পিসিআর ল্যাব কোভিড-১৯–এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এত কমসংখ্যক জনবল দিয়ে এটা চালানো কঠিন। একইভাবে অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকদেরও না বুঝে বদলি করা হয়েছে। ১ হাজার ৩১৩ শয্যার হাসপাতালটিতে দুই হাজার রোগী থাকেন। এই বদলিতে আরটি–পিসিআরসহ সব বিভাগের সেবা ব্যাহত হবে।

বদলি ছয়জনের মধ্যে আরটি–পিসিআর ল্যাবের তত্ত্বাবধান কমিটির আহ্বায়ক মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান আবুল কালামকে বিআইটিআইডিতে, সদস্যসচিব আরিফুর রহমানকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সদস্য সাবরিনা শারমিনকে ফেনীর দাগনভূঞায় বদলি করা হয়। এ ছাড়া একই বিভাগের আ ন ম সাইফুল করিমকে বিআইটিআইডিতে, জাহানারা রোজীকে চমেক কোভিড বিভাগে এবং আফরিন সুলতানাকে খাগড়াছড়িতে বদলি করা হয়।

আজ চমেক অধ্যক্ষ কার্যালয় বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য জোর অনুরোধ জানিয়েছে মন্ত্রণালয়ে। চমেকে ৩০০ জনের মতো শিক্ষকের অর্ধেকের বেশি বদলি করা হয়।

জানতে চাইলে চমেক অধ্যক্ষ শাহেনা আকতার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আরটি–পিসিআর ল্যাবের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে অনুরোধ জানিয়েছি। এ ছাড়া যাদের বিভাগ চালাতে দরকার হবে, তাদের বিষয়ও বিবেচনা করার অনুরোধ করেছি। কোভিড মোকাবিলার পাশাপাশি অন্যান্য কাজ যেমন অনলাইনে পাঠদান, রোগী দেখাও চালিয়ে যেতে হবে। সরকারি আদেশ মেনে চলতে হবে।’

চমেক আরটি–পিসিআর ল্যাবে প্রতিদিন ৩০০টি পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়। অনেক সময় আরও বেশিও হয়ে থাকে। এর বাইরে সরকারিভাবে নগরে বিআইটিআইডি এবং ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়।

বদলি আদেশ পাওয়া চমেক আরটি–পিসিআর ল্যাবের প্রধান সহকারী অধ্যাপক আবুল কালাম বলেন, ‘আমাদের পালা করে পিসিআর ল্যাবের জন্য দায়িত্ব পালন করতে হয়। এত দিন ১০ জন মিলে তা সামাল দিতাম। ল্যাবের স্বার্থে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করছি।’

জানতে চাইলে বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ফয়সল ইকবাল চৌধুরী বলেন, এই বদলি কাঁচা হাতের কাজ হয়েছে। চমেক হাসপাতাল সব রোগীর আশ্রয়স্থল। এখান থেকে একযোগে এত চিকিৎসক বদলি ভালো হয়নি। সংকটে পড়বে হাসপাতালের সেবা।