গাইবান্ধায় মানুষ বা পশু যাকেই কামড়াক, দ্রুত র‍্যাবিস টিকা দিতে হবে

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার ছয়টি গ্রামে দেড় মাস ধরে অচেনা প্রাণী আক্রমণ চালাচ্ছে। এতে এ পর্যন্ত ১ জনের মৃত্যু এবং অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। উপজেলার তালুক কেঁওয়াবাড়ি, হরিনাথপুর, কিশামত কেঁওয়াবাড়ি, খামার বালুয়া, দুলালের ভিটা ও তালুকজামিরা গ্রামের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. মাসুদার রহমানের সঙ্গে।

মো. মাসুদার রহমান
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: পলাশবাড়ীর ছয় গ্রামে যে প্রাণী মানুষকে কামড় দিচ্ছে, আপনারা কি কোন ধরনের প্রাণী এমন করছে চিহ্নিত করতে পেরেছেন?

মাসুদার রহমান: এসব গ্রামে যে প্রাণী মানুষকে আক্রমণ করছে, সেটা পাগলা শিয়াল হতে পারে। কারণ, শিয়ালের ৫০টির মতো উপপ্রজাতি আছে। তাদের আকার, আকৃতি ও রং বিভিন্ন প্রকারের হয়। শিয়ালের স্বভাব হচ্ছে দুই বা তারও বেশি শিয়াল যখন একত্রে থাকে, তখন কোনো লোককে একা পেলে আক্রমণ করতে পারে। শিয়াল নিশাচর প্রাণী। যখন তাদের খাদ্যের অভাব হয়, তখন তারা দিনেও লোকালয়ে আসে। এ ছাড়া শিয়াল, কুকুর, বিড়ালসহ হিংস্র বন্য প্রাণীরা জলাতঙ্ক রোগের র‍্যাবিস ভাইরাস বহন করে থাকে। এসব প্রাণী যখন নিজেরা জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়, তখন তারা মানুষ ও যেকোনো প্রাণীকে কামড় দিলে তারাও জলাতঙ্কে আক্রান্ত হতে পারে। পলাশবাড়ীর ওই সব গ্রামে যেসব প্রাণী মানুষকে আক্রমণ করছে, সেগুলো হয়তো জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে। শিয়াল কিংবা কুকুরের জলাতঙ্ক হলে তারা পাগল হয়ে থাকে। সেগুলোই হয়তো মানুষ ও গরু-ছাগলকেও আক্রমণ করছে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: যাঁরা এই প্রাণীর আক্রমণের শিকার, তাঁরা এখন কী করবেন?

মাসুদার রহমান: এ ধরনের প্রাণী মানুষ বা পশু যাকেই কামড় দিক, তাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দ্রুত র‍্যাবিস টিকা দিতে হবে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: এই প্রাণীর আক্রমণ ঠেকানোর জন্য মানুষ কী করতে পারে? প্রশাসনই–বা কী ব্যবস্থা নিয়েছে?

মাসুদার রহমান: ওই সব গ্রামের মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। নিরাপদে চলাফেরা করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আতঙ্ক কাটাতে পুলিশ টহল দিচ্ছে। বন বিভাগও কাজ করছে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: ছয় গ্রামের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। মানুষের ভয় কাটাতে প্রাণিসম্পদ বিভাগ কী ব্যবস্থা নিয়েছে?

মাসুদার রহমান: উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও মাঠপর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তাদের সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয়েছে। তাঁরা আক্রান্ত মানুষকে দ্রুত ভ্যাকসিন নিতে পরামর্শ দিচ্ছেন। এ ছাড়া কী ধরনের প্রাণী এই আক্রমণ চালাচ্ছে, সেটিও মাঠে থেকে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয়েছে।