গাড়ি ভাঙচুরের ভিডিও করায় সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সোমবার সন্ধ্যায় একটি বিক্ষোভ থেকে গাড়ি ভাঙচুর করেছেন ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী
ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনতা দিবসের শোভাযাত্রায় ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রসংগঠনটির একটি অংশ। সে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখার দাবিতে আজ সোমবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছে ওই অংশটি। বিক্ষোভ থেকে একটি ব্যক্তিগত গাড়ি ভাঙচুরের ভিডিও করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিকের ওপর চড়াও হয়েছেন ছাত্রলীগের ওই নেতা–কর্মীরা।

আহত ওই সাংবাদিকের নাম আবদুল্লাহ ওমর ওরফে আসিফ। তিনি স্থানীয় একটি অনলাইন পোর্টালের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেন। তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শনিবার স্বাধীনতা দিবসের শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ নিয়ে ছাত্রলীগের নেতা তায়েফ রিয়াদ ছাত্রীদের লাঞ্ছিত করেন। ওই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখার দাবিতে আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় বিক্ষোভ করেন ছাত্রলীগের আরেকটি পক্ষের নেতা–কর্মীরা। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেতা–কর্মীরা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল, ফজলুল হক হল, শামসুল হক হল ও ঈশা খাঁ হলের শিক্ষার্থী। বিক্ষোভের একপর্যায়ে বিকেলে নিরাপত্তা শাখার দুই পাশের রাস্তা বন্ধ করে দেন আন্দোলনকারীরা। ওই সময় একটি ব্যক্তিগত গাড়ি ভাঙচুর ও গাড়িচালককে মারধর করেন ছাত্রলীগের ওই কর্মীরা। এ ঘটনার ভিডিও করতে গেলে আবদুল্লাহ ওমর আসিফের ওপর চড়াও হন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা–কর্মী। এ সময় তাঁরা আবদুল্লাহ ওমরকে এলোপাতাড়ি কিল–ঘুষি মারতে থাকেন। মারধরের সময় ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীরা। পরে তাঁকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে নেওয়া হয়।

আহত সাংবাদিক আবদুল্লাহ ওমর প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীরা গাড়ি ভাঙচুরের সময় সাংবাদিক হিসেবে আমি আমার পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম। এমন সময় শাহীন সুমন নামের একজন নেতাসহ কয়েকজন মিলে আমাকে মারধর করেন। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

তবে অভিযুক্ত শাহীন সুমন বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি আন্দোলনে উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু আমি কারও গায়ে হাত তুলিনি।’

আবদুল্লাহ ওমরের ওপর হামলার ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যার দিকে ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতা ইমতিয়াজ আবির, আবু রায়হান মিথুন, সজীব চন্দ্র সরকার, নিলয় মজুমদার ও মিফতাহ সাংবাদিকদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না বলে অঙ্গীকার করেন তাঁরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ মহির উদ্দীন বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তদন্ত করে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।