গোপালগঞ্জে দুই ইন্টার্ন চিকিৎসকের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা, কর্মবিরতি

হামলা
প্রতীকী ছবি

গোপালগঞ্জে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের দুই ইন্টার্ন চিকিৎসকের ওপর রোগীর স্বজনদের হামলা করার অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি নূর মোহাম্মদ বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি করেন।

গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে হামলার ঘটনা ঘটে। আহত দুই চিকিৎসককে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত দুই ইন্টার্ন চিকিৎসক হলেন আলমগীর হোসেন (২৭) ও তাহমিদ আঞ্জুম (২৬)।

এদিকে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গতকাল শুক্রবার রাত ৯টা থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ শাখা। ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ সভাপতি নূর মোহাম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন।

হামলার শিকার তাহমিদ আঞ্জুম বলেন, গতকাল গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করছিলেন তাঁর সহপাঠী আলমগীর হোসেন। ওই ওয়ার্ডের ৪৮ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন সদর উপজেলার বাজুনীয়া গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে আমিনুল ইসলাম (৩৬)। ৭ জুলাই এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দায়িত্বরত আলমগীর হোসেন হাসপাতালের একই ফ্লোরে শৌচাগারে যান। এ সময় রোগীর ভাগনে পরিচয়ে এক যুবক ইন্টার্ন চিকিৎসকের কক্ষে এসে দরজায় ধাক্কাধাক্কি করেন। আলমগীর শৌচাগার থেকে বের হয়ে কী হয়েছে জানতে চাইলে ওই যুবক তাঁর উপর চড়াও হন। দায়িত্ব পালন শেষে আলমগীর হাসপাতালের প্রধান ফটকের বাইরে খাবার খেতে গেলে রোগীর স্বজনেরা তাঁর ওপর হামলা করেন। খবর পেয়ে তাঁকে রক্ষা করতে ঘটনাস্থলে গেলে তাহমিদও হামলার শিকার হন।

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘গতকাল রাত আটটার দিকে হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে রোগী আমিনুল ইসলাম লোকজন নিয়ে রামদা, রড, বাঁশ দিয়ে আলমগীর হোসেনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মাটিতে ফেলে রাখেন। খবর পেয়ে তাহমিদ ছুটে গেলে তাঁকেও বেধড়ক মারপিট করেন।’

গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক অসীত কুমার বলেন, ‘আমাদের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা জীবন বাজি রেখে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁদের ওপর হামলা করা হয়। কেন তাঁদের ওপর এই হামলা?’ তিনি বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে না পারলে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা আন্দোলনে যাবেন এবং তাঁরা তাঁদের সর্মথন করবেন।

গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিহাদ আদনান বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একটি দল ইতিমধ্যে মাঠে রয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মামলায় রোগী আমিনুল ইসলাম, তাঁর দুই ভাগনে ইয়াছিন সরদার ও ইমন সরদারসহ অজ্ঞাত চার থেকে পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।