গৌরীপুরের কাছারি ঘরটি এখন ‘ভূমি জাদুঘর’

নেত্রকোনা শহরের ছোটবাজার এলাকায় জমিদারি আমলের এই ঘরকে জাদুঘর হিসেবে চালু করা হয়
ছবি: প্রথম আলো

নেত্রকোনায় ‘ভূমি জাদুঘর’ উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার বিকেল চারটার দিকে শহরের ছোটবাজার এলাকায় সদর উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে জমিদারি আমলে স্থাপিত ঘরটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জাদুঘর হিসেবে চালু করা হয়।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. শফিকুর রেজা বিশ্বাস প্রধান অতিথি হয়ে জাদুঘরটির উদ্বোধন করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মনির হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা আক্তার, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) মো. সেলিম মিয়া, সহকারী কমিশনার (ভূমি) খবিরুল আহসান, সহকারী ভূমি কর্মকর্তা এনামুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে ভূমি কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা হয়।

নেত্রকোনায় ‘ভূমি জাদুঘর’র উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেল চারটার দিকে শহরের ছোটবাজার এলাকায় সদর উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে জমিদারি আমলে স্থাপিত ঘরটিকে ভূমি জাদুঘর হিসেবে উদ্বোধন করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা ও সদর উপজেলা ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শহরের ছোটবাজার এলাকায় মেছুয়া বাজারের বিপরীতে অবস্থিত ওই ভূমি কার্যালয় জমিদারি আমলে নির্মিত। ময়মনসিংহের গৌরীপুরের জমিদার ব্রজেন্দ্র কিশোর রায়চৌধুরী প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায়ের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে টিন-কাঠের দ্বারা চৌচালা বড় এই ঘর নির্মাণ করেন। স্থানীয় লোকজনের কাছে এটি ‘গৌরীপুরের কাছারি’ হিসেবে পরিচিত।

সম্প্রতি ওই কার্যালয়ের যাবতীয় কার্যক্রম পাশে অবস্থিত একটি নতুন ভবনে স্থানান্তর করা হয়। এরপর ঐতিহ্যবাহী ঘরটি অনেকটা অব্যবহৃত হয়ে পড়ে। ফলে ওই কার্যালয়ে কর্মরত সহকারী ভূমি কর্মকর্তা কবি এনামুল হক এবং লোক গবেষক সঞ্জয় সরকার ঘরটিতে একটি ‘ভূমি জাদুঘর’ (ভূমি ও কৃষি উপকরণ প্রদর্শনশালা) প্রতিষ্ঠার জন্য দাবি জানান। এ নিয়ে গত ২০ জুলাই সঞ্জয় সরকার জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমানের কাছে লিখিত প্রস্তাব দেন। গত ৪ আগস্ট জেলা প্রশাসক ঘরটি পরিদর্শনসহ ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনুধাবন করে ভূমি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।

এনামুল হক ও সঞ্জয় সরকার জানান, প্রস্তাবটি গ্রহণ করায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ।

জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান বলেন, এই জাদুঘরের মাধ্যমে স্থাপনাটি যেমন সংরক্ষণ হচ্ছে, তেমনি নতুন প্রজন্মের জন্য ভূমিসংক্রান্ত তথ্যবহুল শিক্ষণীয় কেন্দ্রে এটি পরিণত হচ্ছে।

বিভাগীয় কমিশনার মো. শফিকুর রেজা বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের দেশ এখনো কৃষিপ্রধান। কৃষি আমাদের আদি পেশা। এই জাদুঘরে ভূমি প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্রের (নথি, মানচিত্র, নকশা) পাশাপাশি গ্রামীণ কৃষির বিলুপ্তপ্রায় উপকরণগুলোও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কারণ, ভূমির সঙ্গে কৃষির বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত।’