বড়লেখায় ৩ দিনেই টিকার নিবন্ধন ৬১৮ জন প্রবাসীর

প্রবাসীদের বাড়িতে গিয়ে চলছে টিকার নিবন্ধন কাজ। সোমবার মৌলভীবাজারের বড়লেখার দক্ষিণভাগ ইউনিয়নের পশ্চিম দক্ষিণভাগ এলাকায়
প্রথম আলো

কোনো প্রকার ঝক্কি-ঝামেলা ছাড়াই প্রবাসীরা এখন বাড়ির কাছে ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রে, নয়তো ঘরে বসেই টিকার নিবন্ধন করতে পারছেন। তাঁদের কেউ দেশে এসে আটকে পড়েছেন, কেউ প্রবাসে যাবেন। ‘প্রবাসীদের দোরগোড়ায় টিকার নিবন্ধন’ মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা প্রশাসনের এই কার্যক্রম শুরুর ৩ দিনেই ৬১৮ জন প্রবাসীর করোনার টিকার নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার তথ্যসেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তারা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টিকার নিবন্ধন করছেন। আছে একটি ভ্রাম্যমাণ টিকা নিবন্ধন সেবা দল। ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রের কয়েকজন উদ্যোক্তাকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়েছে মৌলভীবাজার জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়। পাশাপাশি একটি মাইক্রোবাস, তিনজন ডিজিটাল সার্ভিস প্রোভাইডার (সেবা প্রদানকারী), প্রয়োজনীয় ল্যাপটপসহ টিকা নিবন্ধনের এই ভ্রাম্যমাণ দল গঠন করা হয়েছে। দলের সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রবাসীদের টিকার নিবন্ধন করে দিচ্ছেন। পুরো কার্যক্রমটি পর্যবেক্ষণ করছেন বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী।

এই কার্যক্রম উদ্বোধনের দিন গত রোববার ৪ জন, পরদিন গতকাল সোমবার ৪০০ জন এবং আজ মঙ্গলবার ২১৪ জন প্রবাসী করোনার টিকার নিবন্ধন করেছেন। তাঁদের মধ্যে বর্ণি ইউনিয়নে ৭৪ জন, দাসেরবাজার ইউনিয়নে ৩৭ জন, নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নে ৮৪ জন, উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নে ৩৭ জন, দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নে ৬৭ জন, বড়লেখা সদর ইউনিয়নে ৪১ জন, তালিমপুর ইউনিয়নে ৭২ জন, দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নে ৬৭ জন, সুজানগর ইউনিয়নে ৫৫ জন, দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নে ৪৩ জন এবং বড়লেখা পৌরসভায় ৪১ জনের নিবন্ধন হয়েছে।

এই কার্যক্রম উদ্বোধনের দিন গত রোববার ৪ জন, পরদিন গতকাল সোমবার ৪০০ জন এবং আজ মঙ্গলবার ২১৪ জন প্রবাসী করোনার টিকার নিবন্ধন করেছেন।

উপজেলার দক্ষিণভাগ ইউনিয়নের পশ্চিম দক্ষিণভাগের কুয়েতপ্রবাসী সাহেদুর রহমান আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল দুপুরে হঠাৎ দেখি আমার বাড়িতে একটি মাইক্রোবাস আইছে। এরপর আমার টিকার নিবন্ধন করে দেওয়া অইছে।’ তিনি জানান, ভ্রাম্যমাণ দলটি আগেই খোঁজ নিয়েছে এলাকার কোন বাড়িতে প্রবাসী আছে। এভাবেই তাঁর বাড়িতেও এসেছে দলটি। সবকিছু খুব দ্রুত হয়েছে। তিনি চিন্তাও করতে পারেননি এত তাড়াতাড়ি নিবন্ধন হবে।

কার্যক্রমের সমন্বয়কারী বড়লেখা উপজেলা কমিউনিটি ই-সেন্টারের পরিচালক রাসেল আহমদ বলেন, ‘ইউএনও স্যারের নির্দেশনামতো আমরা কাজ করছি। হটলাইন হিসেবে আমার মোবাইল নম্বরটি দেওয়া আছে। যেখান থেকে ফোন আসছে, সেখানেই ভ্রাম্যমাণ গাড়ি নিয়ে ছুটে যাচ্ছি। এ ছাড়া স্থানীয়ভাবে প্রবাসীদের তথ্য নিয়েও বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনার টিকা নিবন্ধন করে দিয়ে আসছি।’

ইউএনও খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী বলেন, নিবন্ধনের জন্য ভ্রাম্যমাণ দল গঠন করে দেওয়ায় প্রবাসীদের খুব উপকার হচ্ছে। সবাই এই উদ্যোগটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। লকডাউনে সব ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র বন্ধ। শুধুমাত্র টিকা নিবন্ধনে প্রবাসীদের কষ্ট দূর করতেই তথ্যসেবাগুলোকে কাজে লাগানো হচ্ছে।