ঘর পেয়ে খুশি মনোয়ার
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার প্রতিমা বংকী তালুকদারপাড়া গ্রামের রাজমিস্ত্রির সহকারী মনোয়ার হোসেন (৩৯)। প্রায় তিন বছর আগে একটি ভবনে কাজ করতে গিয়ে তিনি দুর্ঘটনায় আহত হন। তখন থেকেই তিনি কোনো কাজ করতে পারেন না।
স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তান নিয়ে অভাবের সংসার। বাস করতেন এক জরাজীর্ণ ঘরে। বিষয়টি নজরে আসে প্রতিবেশীদের। পরে প্রতিবেশীরা তাঁকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জুলফিকার হায়দার কামাল তাঁদের বাড়ির আঙিনায় একটি নলকূপ স্থাপন করে দিয়েছেন।
আজ বুধবার বিকেলে মনোয়ারের নতুন ঘর উদ্বোধন করা হয়। এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জুলফিকার হায়দার কামাল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চিত্রা শিকারি, সখীপুর পিএম পাইলট মডেল গভ. স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কে বি এম খলিলুর রহমান, হাতিয়া কলেজের অধ্যক্ষ রহিজ উদ্দিন, একতা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাফর ইকবাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেশী রেজাউল তালুকদার জানান, বছর তিনেক আগে মনোয়ার হোসেন রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। ওই দুর্ঘটনায় পায়ে আঘাত পেয়ে তিনি হাঁটার শক্তি হারান। স্ত্রী ও ছয় বছরের একটি মেয়ে নিয়ে তিনি বেশ বিপাকে পড়ে যান।
প্রতিবেশী রেজাউল তালুকদার বলেন, আয়ের ব্যবস্থা না থাকায় লোকজনের সহায়তায় কোনোরকমে মনোয়ারের সংসার চলে। তিনি যে ঘরে পরিবার নিয়ে বাস করছিলেন, সেটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। প্রতিবেশী অধ্যক্ষ কে বি এম খলিলুর রহমান ও স্থানীয় লোকজন মিলে মনোয়ারের পরিবারের জন্য নতুন ঘর তৈরির উদ্যোগ নেন। পরে সৌদিপ্রবাসী হজরত আলী, জুলহাস উদ্দিন, আবদুল, মিনহাজ তালুকদারসহ স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় মনোয়ারকে একটি চৌচালা টিনের ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়। ওই ঘরের সঙ্গে একটি শৌচাগারও নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জুলফিকার হায়দার ওই ঘরের আঙিনায় একটি নলকূপ স্থাপন করে দেন।
নতুন ঘর ও নলকূপ পেয়ে বেশ খুশি মনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভাঙা ঘরটির বিভিন্ন জায়গায় ছিদ্র ছিল। ছিদ্র দিয়ে বৃষ্টির পানি ঘরে আসায় রাতে ঘুমাতে পারতাম না। আমার এই ভিটায় কখনো এত বড় ঘর হবে, চিন্তাও করিনি।’ তিনি এ সহযোগিতার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
এ বিষয়ে ইউএনও চিত্রা শিকারি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকেও অসচ্ছল ব্যক্তিদের ঘর দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এখানে একটি অসচ্ছল পরিবারকে প্রতিবেশীরা ঘর উপহার দিয়ে প্রশংসনীয় কাজ করেছেন।