ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে হাতিয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত নোয়াখালীর হাতিয়ার তালুকদার গ্রাম। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকেছবি: প্রথম আলো

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে অধিক উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হচ্ছে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিম্নাঞ্চল। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে জোয়ার শুরু হয়। এতে নলেরচরের তালুকদার ও গছিনা গ্রামসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ও পূর্ণিমার কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি জোয়ার হচ্ছে। তবে এটি এখনো ক্ষতির পর্যায়ে যায়নি।

হাতিয়ার সুখচর ও নলেরচরের স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে মেঘনা নদীতে জোয়ার শুরু হয়। তবে সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এবং আগামীকাল বুধবার পূর্ণিমা হওয়ায় গতকাল সোমবারের মতো আজও জোয়ারের উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। দুপুর নাগাদ বেড়িবাঁধের বাইরের বেশির ভাগ এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত নোয়াখালীর হাতিয়ার গোছিনা গ্রাম। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে
ছবি: প্রথম আলো

চরঈশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মো. আজার উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, জোয়ারের পানিতে নলেরচরের তালুকদার গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের বেড়িবাঁধের বাইরের এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। পানি ক্রমশ বাড়ছে। তবে এখনো ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর তাঁরা পাননি। তিনি জানান, জোয়ারের পানির তোড়ে স্বেচ্ছাশ্রমে নদীর তীর সংরক্ষণ কর্মসূচির জিও ব্যাগ ভরাটের কাজে বিঘ্ন ঘটছে।

অপরদিকে সুখচর ইউনিয়নের চর আমান উল্যাহ গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সোমবারের মতো মঙ্গলবারও অস্বাভাবিক উচ্চতায় জোয়ার বইছে। স্থানীয় গছিনা গ্রামসহ আশপাশের এলাকায় প্রবল বেগে জোয়ারের পানি ঢুকতে দেখেছেন তিনি। এতে ৬০-৭০টি পরিবার পানিবন্দী অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। ঘূর্ণিঝড় ও পূর্ণিমা দুটোর প্রভাবে পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড়ে ভেঙে যাচ্ছে সম্প্রতি নির্মিত বেড়িবাঁধ। নোয়াখালীর হাতিয়ার নলচিরা ইউনিয়নের তুফানিয়া গ্রামে মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে
ছবি: প্রথম আলো

হাতিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পূর্ণিমার সময় জোয়ারের উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে দুই-তিন মিটার বেশি হয়। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। তাই দুটোর প্রভাবে বেশি উচ্চতার জোয়ার হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সোমবার এবং মঙ্গলবার জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে কোথাও কোনো বেড়িবাঁধের ক্ষতি হয়নি। সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি), রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সংস্থার স্বেচ্ছাসেবীরা প্রস্তুত আছেন।