চট্টগ্রামে ছাত্রলীগকর্মী মামুন হত্যায় সাতজনের যাবজ্জীবন

কারাদণ্ড
প্রতীকী ছবি

চার বছর আগে চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের কর্মী মামুন উর রশিদ (২৬) হত্যাকাণ্ডে সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ কে এম মোজাম্মেল হক এই রায় দেন।

যাবজ্জীবন পাওয়া আসামিরা হলেন মো. আজম, মো. ফারুক, আলী আজগর, ওমর উদ্দিন, শওকত হোসেন, এস এম আশরাফুল আলম ও মো. পারভেজ। তাঁদের মধ্যে পারভেজ ও আশরাফুল পলাতক। বাকিরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি মো. আইয়ুব খান প্রথম আলোকে বলেন, সাত আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছর কারাভোগ করতে হবে তাঁদের। এ ছাড়া ঘটনার দিন মামুনের সঙ্গে থাকা আবদুল আজিজকে কুপিয়ে আহত করায় আসামি ওমর উদ্দিনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তাঁর দুটি সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে।

মামুন কর্ণফুলী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। ২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কর্ণফুলীর শাহ মীরপুর এলাকায় আসামিরা তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেন। মামুনের ডান হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। মামুনের সঙ্গে থাকা আজিজকে কুপিয়ে আহত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা মামুনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মামুনের ভাই মো. ইয়াছিন কর্ণফুলী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, আসামিরা মাদকের কারবার করতেন। তাঁদের এ কারবারে বাধা দিয়ে আসছিলেন মামুন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা তাঁকে খুন করেন।

এ মামলায় ২০১৯ সালের ১১ মার্চ সাত আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হয়। ১৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামুনের মা হোসনে আরা বেগম। তিনি রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে কাঁদতে শুরু করেন। আসামিদের ফাঁসির দণ্ড না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সন্তানহারা এই মা।

মামুনের ভাই মো. ইয়াছিন প্রথম আলোকে বলেন, রায়ে তাঁরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন। তাঁরা আশা করেছিলেন যে তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, অন্তত তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। এরপরও উচ্চ আদালতে আসামিদের এই সাজা যেন বহাল থাকে, সে আশা করেন তাঁরা।