চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাত দিনের বিশেষ লকডাউন ঘোষণা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মানচিত্র

করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় এক সপ্তাহের জন্য বিশেষ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ আজ সোমবার দুপুরে তাঁর কার্যালয়ে প্রেস বিফিংয়ে এ ঘোষণা দেন। প্রেস বিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রাকিব ও সিভিল সার্জন জাহিদ নজরুল চৌধুরী।

জেলা প্রশাসক বলেন, সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী হার লক্ষ করা যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে করোনা সংক্রমণের হার ৫০ শতাংশের বেশি। পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনাক্রমে আজ দিবাগত রাত ১২টা থেকে লকডাউন দেওয়া হয়েছে। জনগণকে সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাখতে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সাত দিনের জন্য জেলাজুড়ে লকডাউন কার্যকর করা হবে।
লকডাউনের সময় সব দোকানপাট ও যানচলাচল বন্ধ থাকবে। রাজশাহী ও নওগাঁ থেকে কোনো যানবাহন চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রবেশ করতে পারবে না, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকেও কোনো যানবাহন জেলার বাইরে যাবে না। রোগী ও অন্য জরুরি সেবাদানকারীর ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে না।

জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ প্রথম আলোকে বলেন, আমের বাজার বসবে। তবে সেটা ছড়িয়ে–ছিটিয়ে বসবে। আম পরিবহনের ক্ষেত্রে বাগান থেকে আম ট্রাকে করে পরিবহন করা যাবে, সেই সঙ্গে কুরিয়ারের মাধ্যমে আম পরিবহন করা যাবে। কলকারখানা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। শ্রমিকদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া করতে হবে।

এর আগে গতকাল রোববার বিকেলে সিভিল সার্জন প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের পর জেলায় সংক্রমণের হার ৭৪ শতাংশে পৌঁছেছিল। তবে সেটা কমে এখন ৩০ শতাংশে এসেছে। ঈদের আগে ঢাকা থেকে আসা লোকজনের মধ্যে থেকেই বেশি ছড়িয়েছে সংক্রমণ। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়েও লোকজন অবৈধভাবে যাতায়াত করেন। তাঁদের থেকেও কিছুটা ছড়াতে পারে। সোনামসজিদ স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন দিয়ে এ পর্যন্ত ৬০ জন চাঁপাইনবাবগঞ্জে এসেছেন। পরীক্ষা করে তাঁদের মধ্যে একজনকে করোনায় সংক্রমিত পাওয়া গেছে। তবে তাঁর মধ্যে কোনো উপসর্গ পাওয়া যায়নি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ৩০০ আক্রান্ত হয়েছেন। গত বছর থেকে এ পর্যন্ত আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ হাজার ২৩২। সুস্থ হয়েছেন এক হাজারজন। করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২৫। তবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত যেসব রোগী ভর্তি রয়েছেন, তাঁরা এ হিসাবের বাইরে।

বিজিবি ৫৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আমির হোসেন মোল্লা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সীমান্তে আমরা টহল জোরদার করেছি। মাইকিং করে সচেতনতা সৃষ্টিরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন আমের মৌসুম চলছে। আম সংগ্রহ ও বাজারজাত করার ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্যবিধি কিছুটা উপেক্ষিত হবে। তবে যতটুকু সম্ভব সতর্কতা অবলম্বনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’