চার কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কারের প্রতিবাদে ছাত্রলীগের সমাবেশ

চার শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন ছাত্রলীগের একাংশের নেতা–কর্মীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে
প্রথম আলো

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে হলের কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগের চার কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এর প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার দুপুরে সমাবেশ ও মিছিল করেছেন ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা।

সমাবেশে অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীদের দাবি, চার কর্মীকে বিনা অপরাধে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ছাত্রলীগ এ সিদ্ধান্ত মানে না। দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রতিবাদ স্লোগান দেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা বলেছেন, বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে ছাত্রলীগ আরও কঠোর আন্দোলনে যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের সভায় চার শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। বহিষ্কৃত চারজনসহ মোট আটজনের হলের আসন বাতিল করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড।

আরও পড়ুন

সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কর্মীরা হলেন টিপিএস বিভাগের সামিউল হক, ফোকলোরের আবু নাঈম আবদুল্লাহ, লোকপ্রশাসনের মোমেন সরকার ও তানভির আহমেদ। তাঁদের কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, সে বিষয়ে ১৫ দিনের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যাও দিতে বলা হয়েছে।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাত দেড়টার দিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৩২৪ নম্বর কক্ষে লোকপ্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ নিহাদকে আটকে রেখে রাতভর নির্যাতন করা হয়। ওয়ালিদ নিহাদ ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে রাজি না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসানের অনুসারীরা এ নির্যাতন চালান বলে অভিযোগ উঠেছে।

নির্যাতনের বর্ণনায় ওয়ালিদ নিহাদ জানিয়েছিলেন, রাতভর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের পর জোর করে তাঁর ভিডিও ধারণ করা হয়। ওই ভিডিওতে বলতে বাধ্য করা হয়, ২০২৩ সালে বিএনপি বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে। বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় এলে ছাত্রলীগ করা কোনো শিক্ষার্থী কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে পারবে না।

ওয়ালিদকে নির্যাতনের ঘটনার বিচার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৌমিত্র শেখর দেশের বাইরে থাকায় প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করেছিলেন, উপাচার্য দেশে ফিরলে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত রোববার উপাচার্য দেশে ফেরেন। এরপর গতকাল বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের সভা হয়।