চার নারী পেলেন ‘আমি অনন্যা’ সম্মাননা

‘আমি অনন্যা’ সম্মাননা হাতে চার সফল নারী।মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার একটি মোটেলে
ছবি: প্রথম আলো

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বগুড়ায় নিজ নিজ অঙ্গনে সফল চার নারীকে দেওয়া হয়েছে ‘আমি অনন্যা’ সম্মাননা। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার একটি মোটেলে এ সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান হয়।

অনুষ্ঠানে সমাজসেবায় অনন্য অবদান রাখায় বেসরকারি সংস্থা টিএমএসএসের নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা বেগমকে ‘মানবতার চেরাগ’ সম্মাননা ও টিএমএসএস রিলিজিয়াস কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দা রাকিবা সুলতানাকে ‘মমতাময়ী মা’ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। আর সফল নারী উদ্যোক্তার সম্মাননা দেওয়া হয়েছে শাহনাজ ইসলাম ও ইশরাত জাহানকে।

সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘আমি অনন্যা’র প্রতিষ্ঠাতা উম্মে ফাতেমা লিসা। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. রাবেয়া খাতুন। বক্তব্য দেন নারী উদ্যোক্তা ইয়াসমিন হাসান, সেলিনা রহমান, শরনী রনি, তাহমিনা পারভীন, সুমাইয়া রিমু, লায়লাতুন নাজিন, মনিরা মনি, তাসলিমা প্রমুখ।

বিকেলে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় নারী দিবস উপলক্ষে উইমেন অ্যান্ড ই–কমার্স ফোরামের (উই) আয়োজনে উদ্যোক্তা সমাবেশ হয়। সমাবেশে ৫৩ জন লাখপতি উদ্যোক্তাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

এ ছাড়া সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শহরের সাতমাথায় মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করে। এতে বক্তারা বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে হলে নারীর সম–অধিকার রক্ষা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করে বৈষম্যহীন সাম্যের সমাজ গড়তে হবে। সমাবেশে নারীর মর্যাদা ও সম–অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম জোরদার, ঘরে-বাইরে সর্বত্র নির্যাতন-ধর্ষণ-যৌন হয়রানি বন্ধের দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম বগুড়া জেলা নেত্রী নিয়তি সরকার। সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বগুড়া জেলা কমিটির নেতা মাসুদ পারভেজ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি ধনঞ্জয় বর্মন, সদস্য পূজা প্রামাণিক প্রমুখ।

সমাবেশে মাসুদ পারভেজ বলেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে হবে। নারী দিবস ঘোষণার ১১০ বছর পরও নারীরা সামাজিক-পারিবারিক জীবনের প্রায় সব ক্ষেত্রে সম–অধিকার থেকে বঞ্চিত। এখনো সম্পত্তির উত্তরাধিকারে নারীর সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সমকাজে সমমজুরি আইন থাকলেও প্রায় সব অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের নারী শ্রমিকেরা এখনো ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত।

বক্তারা বলেন, প্রতিদিনই ঘরে-বাইরে সর্বত্র নারীরা নির্যাতন-ধর্ষণ-যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কন্যাশিশু ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছেন হাজারো কিশোরী। নারী-পুরুষ মিলে বৈষম্য ও ভোগবাদী সমাজ ভাঙার আন্দোলন ঐক্যবদ্ধভাবে গড়ে তুলতে হবে।