চার বছর পর তদন্তে বেরিয়ে এল বাবাকে গলা কেটে হত্যা করেছেন ছেলে
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় চার বছর আগে খুন হন ব্যবসায়ী গোলাম হোসেন। এ ঘটনায় মামলা হলেও চার বছরে ছয়জন তদন্ত কর্মকর্তা হত্যারহস্যের কোনো কূলকিনারা করতে পারেননি। সর্বশেষ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপপরিদর্শক (এসআই) জায়েদ আলী ওরফে জাহিদের তদন্তে বেরিয়ে আসে, ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (২৯) গলা কেটে হত্যা করেছেন বাবা গোলাম হোসেনকে।
ওই মামলায় একমাত্র আসামি জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করে লালমনিরহাটের আদালতে পাঠানো হয়। এরপর নিজের দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন জাহাঙ্গীর। আদালত তাঁকে লালমনিরহাট জেলহাজতে প্রেরণ করতে নির্দেশ দেন।
বৃহস্পতিবার সকালে লালমনিরহাট সিআইডির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইসমাইল এসব তথ্য জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার মো. ইসমাইল বলেন, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই গভীর রাতে কালীগঞ্জ উপজেলার নিথক অচিনতলা গ্রামের ব্যবসায়ী গোলাম হোসেনকে (৫৫) নিজ শোবার ঘরে গলা কেটে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরদিন তাঁর বড় ছেলে জাহিদুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। একে একে থানা ও সিআইডির ছয়জন তদন্ত কর্মকর্তা মামলাটি তদন্ত করেন। কিন্তু হত্যারহস্যের কোনো কূলকিনারা করা যায়নি। এরপর এ মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির এসআই জায়েদ আলী জাহিদ। তদন্তের একপর্যায়ে নিহত গোলাম হোসেনের দ্বিতীয় ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে তাঁর সন্দেহ হয়। এরপর তাঁকে গত ১০ এপ্রিল আটক করেন তিনি।
মো. ইসমাইল আরও বলেন, আদালতের মাধ্যমে জাহাঙ্গীরকে দুই দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং তিনি দোষ স্বীকার করেন। এরপর গত ৩১ মে তাঁকে লালমনিরহাটের আদালতে নেওয়া হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন জাহাঙ্গীর।
এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার ইসমাইল বলেন, জাহাঙ্গীর আলমের শারীরিক অসুস্থতার সময় তাঁর বাবা গোলাম হোসেন তাঁকে কবিরাজি চিকিৎসা করান। এতে তাঁর যৌনশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে জাহাঙ্গীরকে ছেড়ে তাঁর স্ত্রী চলে যান। সেই ক্ষোভ থেকে জাহাঙ্গীর তাঁর বাবাকে হত্যার সুযোগ খুঁজতে থাকেন। ঘটনার দিন রাতে ঝড়–বৃষ্টি থাকার সুযোগে শোবার ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত বাবাকে গলা কেটে হত্যা করেন তিনি।