চার লাখ টাকার বিনিময়ে সদস্য প্রার্থীকে জিতিয়ে দিতে চাইলেন নির্বাচন কর্মকর্তা

রংপুর জেলার মানচিত্র

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে এক সদস্য প্রার্থীকে টাকার বিনিময়ে জয়ী করার বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার গোপন ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার চার দিন আগে উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল হান্নানের গোপন ফোনালাপের একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ৭ ফেব্রুয়ারি সপ্তম ধাপে উপজেলার ১৭টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

অডিও ক্লিপ থেকে জানা যায়, চার লাখ টাকার বিনিময়ে ইউপি সদস্য প্রার্থী রফিকুল ইসলামকে নির্বাচনে জিতিয়ে দেওয়ার জন্য আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল হান্নান। রফিকুল ইসলাম ফুটবল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। ভোটের আগেই অন্তত কিছু ব্যালট পেপার সরবরাহের কথাও জানান তিনি।

ফাঁস হওয়া ফোনালাপে সদস্য প্রার্থী রফিকুলকে আবদুল হান্নান বলেন, ‘নির্বাচন করতে গেলে প্রতিদিনই আপনার ১০ হাজার করে টাকা ব্যয় হবে ও তাতে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ হবে। সেটি করলেও নির্বাচিত হওয়ার কোনো গ্যারান্টি নেই।’ বরং তাঁর সঙ্গে চার লাখ টাকার চুক্তি করলে তিনি যেভাবেই হোক জিতিয়ে দেবেন। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও প্রশাসনের সহযোগিতায় তিনি সদস্য প্রার্থী রফিকুলকে জিতিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন।

এ বিষয়ে সদস্য প্রার্থী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনালাপের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে সেই ফোনালাপ কীভাবে ফাঁস হলো, তা তিনি জানেন না। এ বিষয়ে জনার জন্য উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল হান্নানের মুঠোফোনে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, পুরো বিষয়টি তিনি অবগত। মিঠাপুকুর উপজেলা থেকে ওই নির্বাচন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) বরাবর আবেদন করা হয়েছে।

রংপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহাতাব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাকে একজন অডিও ক্লিপটি সরবরাহ করেছেন। আমি অডিও ক্লিপটি শুনেছি। একজন মেম্বার প্রার্থীর সঙ্গে তিনি (উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা) কথা বলেছেন। টাকার বিনিময়ে তাঁকে জিতিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল হান্নানকে প্রত্যাহার করে কুড়িগ্রাম জেলায় সংযুক্ত করা হয়েছে। আর পীরগাছা উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা শোয়েব সিদ্দিকীকে মিঠাপুকুর উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।