চিকন রশি দিয়ে অটোরিকশাচালকের গলায় ফাঁস লাগানো হয়: পুলিশ

চালকের গলা কেটে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন করার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জানায় পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জয়পুরহাট সদরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

জয়পুরহাট সদর উপজেলায় চালকের গলা কেটে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশাটি। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার দুজন ট্রাক চালানোর পাশাপাশি অটোরিকশা ছিনতাই করেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় পুলিশ সুপার (এসপি) মাছুম আহাম্মদ ভূঞা নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা বলেন, ২৫ অক্টোবর সকাল আটটায় জয়পুরহাট-মঙ্গলবাড়ি সড়কের পাইকড়তলী এলাকার একটি ধানখেত থেকে অটোরিকশাচালক শফিকুল ইসলামের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিনই শফিকুল ইসলামের বাবা নিলু ফকির বাদী হয়ে জয়পুরহাট সদর থানায় একটি মামলা করেন। জয়পুরহাট সদর থানা-পুলিশ ও পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনে তৎপরতা শুরু করে। প্রথমে এই মামলার কোনো ক্লু পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, মামলার পর ক্ষেতলাল উপজেলার তিলাবদুল পূর্বপাড়া গ্রামের রশিদুল (৩২) ও রুবেল হোসেনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়। রশিদুল পেশায় ট্রাকচালক, আর রুবেল তাঁর সহকারী। ২৪ অক্টোবর তাঁরা বিকেল পাঁচটায় জয়পুরহাট শহরের পৃথিবী কমপ্লেক্সের সামনে অটোরিকশা স্ট্যান্ডে আসেন। এর আগে তাঁরা শহরের পাঁচুর মোড়ের একটি দোকান থেকে ৩০ টাকায় একটি চাকু কেনেন। অটোরিকশা স্ট্যান্ড থেকে তাঁরা ২০ টাকায় শফিকুল ইসলামের অটোরিকশা রিজার্ভ নিয়ে মঙ্গলবাড়িতে আসেন। মঙ্গলবাড়ি থেকে তাঁরা আদমদীঘি এলাকায় গিয়ে কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করেন। এরপর সেখান থেকে তাঁরা জয়পুরহাটের উদ্দেশে রওনা হন।

রাত নয়টায় জয়পুরহাট-মঙ্গলবাড়ি সড়কের পাইকড়তলী এলাকায় এসে যাত্রীর আসনে থাকা রশিদুল পেছন থেকে চিকন রশি দিয়ে অটোরিকশাচালক শফিকুলের গলায় ফাঁস লাগান। তাঁর সহযোগী রুবেল চালককে জাপটে ধরে থাকেন। রশিদুল চাকু দিয়ে চালকের গলা কেটে হত্যা করেন। পরে দুজনে লাশ ধানখেতে ফেলে অটোরিকশা ছিনিয়ে নিয়ে যান।

পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, অটোরিকশাটি নিয়ে তাঁরা ক্ষেতলালের বটতলী বাজারে গিয়ে পাঁচটি ব্যাটারি খুলে জহুরুলের অটোরিকশার ব্যাটারির দোকানে ২৩ হাজার টাকায় সেগুলো বিক্রি করে টাকা ভাগাভাগি করে নেন। পরে তাঁরা অটোরিকশাটি বটতলী বাজারের মতিয়ারের গ্যারেজে রেখে চলে যান। ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা, বিক্রি করা পাঁচটি ব্যাটারি, চিকন রশি ও গলা কাটার কাজে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রাক চালানোর পাশাপাশি তাঁরা অটোরিকশা ছিনতাই করেন। রশিদুল ও রুবেলের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনেও মামলা আছে। তাঁদের আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।