চিকিৎসক সেজে এক যুগ ধরে প্রতারণা, এক লাখ টাকা জরিমানা

ভ্রাম্যমাণ আদালত
প্রতীকী ছবি

নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিতেন। ব্যবস্থাপত্রে লিখতেন এমবিবিএসসহ নানা উচ্চতর ডিগ্রির নাম। একই সঙ্গে মেডিসিন, নাক কান গলা, চর্ম যৌন এলার্জি বিশেষজ্ঞ দাবি করা কথিত এই চিকিৎসক এক যুগ ধরে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল-ক্লিনিকে রোগী দেখতেন। রোগীদের কাছ থেকে নিতেন মোটা অঙ্কের ফি।

রাষ্ট্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ শনিবার সকালে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে গিয়ে জানা যায়, এত দিন ধরে রোগী দেখা ওই ব্যক্তি ভুয়া চিকিৎসক। তাঁর নাম আবদুর রশিদ সরকার। তিনি কুমিল্লার মুরাদনগরের মৃত বাহার আলী সরকারের ছেলে।

ভ্রাম্যমাণ আদালতে নেতৃত্ব দেওয়া বগুড়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুপম দাস ওই ভুয়া চিকিৎসককে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেন। অর্থদণ্ড আদায় করার পর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার আল সাফি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে সহায়তা করেন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা ও র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) সদস্যরা।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী বগুড়া জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার রুপম দাস প্রথম আলোকে বলেন, আবদুর রশিদের কাছ থেকে এমবিবিএসসহ নানা উচ্চতর ডিগ্রির নাম লেখা ব্যবস্থাপত্র ও ভিজিটিং কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। নিজেকে চিকিৎসক দাবি করলেও কোন মেডিকেলে পড়াশোনা করেছেন, তা বলতে পারেননি তিনি। প্রথমে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার আবদুর রশিদ সরকার নামে পরিচয় দেন।

জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন, তাঁর বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায়। ১৯৯০ সালে এইচএসসি পাসের পর পল্লী চিকিৎসকের পেশা বেছে নেন। পরে এমবিবিএসসহ বিভিন্ন ডিগ্রিধারী চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতে শুরু করেন। এভাবে ভুয়া পরিচয়ে এক যুগ ধরে বিভিন্ন শহরে রোগী দেখতেন তিনি। কিছুদিন আগেও বগুড়া শহরের একটি ক্লিনিকে রোগী দেখেছেন। দুই সপ্তাহ ধরে আদমদীঘির আল সাফি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখছিলেন আবদুর রশিদ।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুপম দাস বলেন, ওই ভুয়া চিকিৎসকের প্রতারণার বিষয়টি প্রথমে জাতীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার নজরে আসে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ আদমদীঘি উপজেলায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে আবদুর রশিদ নিজের দোষ স্বীকার করেন। এরপর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে তাঁকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।