ছয়জনের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা, গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার

ফাহিম ফয়সাল
ছবি: সংগৃহীত

মাগুরায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ‘ডিজিটাল ডিভাইস’ ব্যবহার করে অসদুপায় অবলম্বন ও সহযোগিতার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মাগুরা এজি একাডেমী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুক্তাদুর রহমান বাদী হয়ে আজ শনিবার দুপুরে মাগুরা সদর থাকায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন।

এদিকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ফাহিম ফয়সাল ওরফে রাব্বিকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. নাহিদ খান ও সাধারণ সম্পাদক মো. হামিদুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের নীতি আদর্শ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে জড়িত থাকায় ফাহিমকে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার ও স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।

জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. নাহিদ খান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রলীগ কোনো ব্যক্তির অপকর্মের দায় নেবে না। ফাহিম ফয়সাল আসলে এ কাজে জড়িত কি না, তাঁরা নিশ্চিত নন। তবে পুলিশ যেহেতু তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে, তাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পরামর্শে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

ছাত্রলীগ নেতা ফাহিম ফয়সাল ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন শহরের ইসলামপুরপাড়ার বাসিন্দা ইফতেখারুল ইসলাম, তাঁর স্ত্রী তারানা আফরোজ, মহম্মদপুর উপজেলার বাসিন্দা ইসমত আরা ঝর্না, একই উপজেলার আমিনুল হাসান ওরফে সোহেল রানা ও তাঁর বোন শাহানা বেগম। তাঁদের মধ্যে তারানা আফরোজ, ইসমত আরা ও আমিনুল হাসান পরীক্ষার্থী। অন্য তিনজনের বিরুদ্ধে তাঁদের সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে। শুক্রবার মাগুরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে তাঁদের আটক করে পুলিশ।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, এক শিক্ষকের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ওই ছয়জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আসামিদের সবার ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর সঙ্গে আরও কারা জড়িত আছেন, পরবর্তী তদন্তে সেগুলো নিশ্চিত হওয়া যাবে।

আরও পড়ুন

মাগুরা জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ডিভাইসটি ডেবিট কার্ডের আদলে তৈরি। ধারণা করা হচ্ছে, ডিভাইসটি অন করলে অপর প্রান্তের সঙ্গে সেটা সংযুক্ত হয়ে যায়। হেডফোনের মাধ্যমে অপর প্রান্ত থেকে দেওয়া বার্তা শুনতে পান ডিভাইস বহনকারী ব্যক্তি। তিনি বলেন, সারা দেশেই এ ধরনের চক্র সক্রিয় থাকতে পারে। যারা পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রশ্নের উত্তর এ ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেয়। এ কাজে মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেন হয়ে থাকতে পারে।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে তারা জানতে পেরেছে, ফাহিম ফয়সাল ঢাকার একটি চক্রের সহযোগী হিসেবে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ডিজিটাল ডিভাইস সংগ্রহ ও বণ্টনের দায়িত্বে ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে ফাহিম জানান, মহম্মদপুর উপজেলায় রেলওয়েতে চাকরি করেন—এমন এক ব্যক্তির মাধ্যমে ডিভাইসগুলো পেয়েছিলেন তিনি। যেটা পাঁচজন পরীক্ষার্থীর কাছে দেন ফাহিম।