ছয় মাস ধরে তাঁরা একঘরে

লালমনিরহাট সদরের একটি গ্রামের মসজিদে ঘোষণা দিয়ে ৩ পরিবারকে একঘরে করা হয় বলে অভিযোগ

একঘরে করে রাখা তিন পরিবারের সদস্যরা। গতকাল লালমনিরহাটের ছেকনাপাড়া গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ছেকনাপাড়া গ্রামের তিন পরিবারকে ছয় মাস ধরে একঘরে করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা লিখিতভাবে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে এ অভিযোগ দিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ছেকনাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এমাদউদ্দিন (৫০), ইসহাক আলী (৭০) ও রিয়াজুল ইসলামের (৪৮) সঙ্গে একই গ্রামের আবদুল মতিনের (৫৮) জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর জেরে প্রভাবশালী আবদুল মতিন (৫৮) গ্রামের মসজিদে ঘোষণা দিয়ে ওই তিন পরিবারকে একঘরে করার কথা বলেন। এরপর থেকে ছয় মাস ধরে ওই তিন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কেউ কথা বলেন না। তাঁদের বাড়িতে কেউ যান না, সামাজিক কোনো অনুষ্ঠানেও তাঁদের দাওয়াত দেওয়া হয় না।

ছেকনাপাড়া বাইতুন মাকাম জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন কেরামত আলী বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ওই তিন পরিবারকে একঘরে করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবদুল মতিন বলেন, জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাঁদের সঙ্গে বিরোধ থাকার ঘটনা সত্য। কিন্তু ওই তিন পরিবারের আচরণে সমস্যা থাকায় গ্রামের লোকজনই অসন্তুষ্ট হয়ে কথা বলেন না। একঘরে করার অভিযোগে তাঁর নাম যুক্ত করাটা ঠিক হয়নি।

একঘরে করা তিন পরিবারের একজন রিয়াজুল ইসলামের মেয়ে মর্জিনা আক্তার বলেন, তাঁর ছোট বোন একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। একঘরে থাকায় তাঁদের সঙ্গে কেউ মিশতে চান না। বাধ্য হয়ে অন্য গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকেন। নিজ গ্রামে বিচ্ছিন্নভাবে থাকা কঠিন।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার ইউএনও উত্তম কুমার রায় অভিযোগ পাওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার তিনি ছেকনাপাড়া গ্রামে গিয়ে ওই তিন পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে সমস্যার সমাধান করতে বলা হয়েছে। এতে কাজ না হলে পরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, ইউএনও তাঁকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে বলেছেন। তিনি এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন।