জনবলসংকট, নেই উৎপাদন

সিরাজগঞ্জের বেলকুচির খামারটিতে অবকাঠামো অনুযায়ী ১৭ জন কর্মী থাকার কথা। আছে মাত্র তিনজন। এতে হাঁসের বাচ্চা উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

হাঁসের বাচ্চা উৎপাদন বন্ধ। তাই ফাঁকা পড়ে আছে হাঁস রাখার শেড। সম্প্রতি সিরাজগঞ্জের বেলকুচির শাহপুরেছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে জেলার একমাত্র আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারের অবকাঠামো ও আধুনিক যন্ত্রপাতি আছে। শুধু প্রশিক্ষিত লোকবলের অভাবে খামারের উন্নত জাতের হাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে খামারিদের পর্যাপ্ত পরিমাণে হাঁসের বাচ্চা সরবরাহ করাও সম্ভব হচ্ছে না।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার যমুনা চরাঞ্চলের মানুষকে হাঁস পালনের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করতেই যমুনার পাড়ের শাহপুর গ্রামে ২০১৩ সালে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে হাঁস প্রজনন খামার প্রতিষ্ঠা করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। বর্তমানে সেখানে ৪৪০টি বড় হাঁস ও ৪৩০টি হাঁসের বাচ্চা আছে। কর্মী আছেন তিনজন। এ ছাড়া খামারে তিন হাজার হাঁস পালনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ছয়টি শেড আছে। এ ছাড়া একসঙ্গে ২৮ হাজার ডিম ফুটানোর ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ইনকিউবেটর, হ্যাচারি ঘর ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ আছে।

সম্প্রতি খামারটিতে গিয়ে দেখা যায়, তিন হাজার হাঁস পালনের অবকাঠামো থাকলেও পর্যাপ্ত হাঁস নেই। অধিকাংশ শেড ফাঁকা পড়ে আছে। ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর জন্য আধুনিক ও উন্নতমানের যন্ত্রটিতে বাচ্চা উৎপাদন একেবারেই বন্ধ রয়েছে। এখানে যে অবকাঠামো আছে, তাতে ১৭ জন লোক থাকার কথা। কিন্তু মাত্র তিনজন কর্মচারী দিয়ে চলছে খামার। এ কারণে খামারিদের যে পরিমাণ হাঁসের বাচ্চার চাহিদা রয়েছে, তা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

কর্মচারীদের একজন টি এম জিকো বলেন, দক্ষ জনবলের অভাব তো আছেই, একই সঙ্গে প্রয়োজনমতো হাঁসের খাবার সরবরাহ না থাকায় খামারটি এমন বেহাল হয়ে গেছে।

উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সোনিয়া সবুর বলেন, এখানে যে হাঁসগুলো পালনের কথা, সেগুলো দেশীয় জাতের তুলনায় দ্রুত বাড়ে এবং বেশি পরিমাণে ডিম দেবে। তাই এই অঞ্চলে হাঁস প্রজনন খামারটি হওয়ার পর থেকে অনেকে লাভের আশায় বাণিজ্যিকভাবে হাঁস পালনের খামার করেন। কিন্তু তাঁরা সময়মতো হাঁসের বাচ্চা না পেলে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। তাই এখনই এই প্রজনন খামারে পর্যাপ্ত লোকবল ও অর্থ বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন।

বেলকুচি উপজেলা সহকারী প্রাণিসম্পদ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রেহানা খাতুন জানান, প্রয়োজনীয় লোকবল ও বরাদ্দ পেলেই এই খামার যমুনা চরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গৌরাঙ্গ কুমার জানান, হাঁস প্রজনন খামারটি দীর্ঘদিন রাজস্ব খাতে না থাকায় যথাযথভাবে বরাদ্দ ও লোকবলের অভাব পূরণ করা সম্ভব হয়নি। চলতি বাজেটে এই খামারসহ দেশের ২২টি খামার রাজস্ব খাতের অন্তর্ভুক্ত করেছে সরকার। দ্রুতই খামারটির উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে।