জব্দ মোটরসাইকেল থানার মালখানা থেকে সরানোর অভিযোগ, পরে জমা
রংপুরের বদরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে থানার মালখানা থেকে একটি মোটরসাইকেল সরিয়ে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। পরে ওই মোটরসাইকেলটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।
থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এসআই রুহুল আমিন থানার সম্পত্তি রেজিস্টার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন। ২০ মার্চ বেলা একটা থেকে দেড়টার মধ্যে থানার মালখানায় আলামত হিসেবে জব্দ থাকা একটি মোটরসাইকেল (দিনাজপুর হ ১২-৩১৪২) উপরিদর্শক রুহুল আমিন থানা থেকে সরিয়ে ফেলেন। ওই ঘটনায় ২১ মার্চ বিকেলে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান থানায় জিডি করেন।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, উপপরিদর্শক রুহুল আমিন কর্তব্যরত কাউকে না জানিয়ে মালখানা থেকে মোটরসাইকেলটি বের করে থানার পরিচ্ছন্নতাকর্মী হৃদয় বাশফোঁড়ের কাছে হস্তান্তর করেন। জিজ্ঞাসাবাদকালে পরে রুহুল তা অস্বীকার করেন।
জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় বাশফোঁড় জানিয়েছেন, উপপরিদর্শক রুহুল আমিনকে অবহিত করে হৃদয় বাশফোঁড় নিজে ব্যবহারের জন্য ওই মোটরসাইকেলটি থানা থেকে নিয়ে গিয়েছিলেন।
তবে পুলিশের একাধিক সূত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে, মোটরসাইকেলটি রুহুল আমিন টাকার বিনিময়ে হৃদয়ের কাছে বিক্রি করেছিলেন। ঘটনাটি জেলার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নজরে এলে থানা-পুলিশের নির্দেশে ২১ মার্চ বিকেল ৫টার দিকে হৃদয় বাশফোঁড় মোটরসাইকেলটি থানায় জমা দেন।
থানার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, থানার সামনে কর্তব্যরত একজন কনস্টেবল বসে মুঠোফোনে কথা বলছেন। এ সময় এসআই রুহুল আমিন ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী হৃদয় বাশফোঁড় হেঁটে ওই কনস্টেবলের কাছাকাছি এসে দাঁড়ান। রুহুল আমিন এদিক–ওদিক তাকান। কয়েক সেকেন্ড পরই হৃদয় বাশফোঁড় থানা কার্যালয়ের ভেতরে যান। পেছনে যান রুহুল আমিন। কিছুক্ষণের মধ্যে হৃদয় বাশফোঁড় মোটরসাইকেল হাতে নিয়ে হেঁটে বের হন। পেছনে ছিলেন রুহুল আমিন। তাঁরা একসঙ্গে মোটরসাইকেলটি নিয়ে থানা চত্বর ত্যাগ করেন।
আজ সোমবার বিকেলে এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে উপপরিদর্শক রুহুল আমিন বলেন, ‘এটা নিয়ে আপনার সঙ্গে সাক্ষাতে কথা বলব।’
পরিচ্ছন্নতাকর্মী হৃদয় বাশফোঁড় বলেন, ‘মালখানার মোটরসাইকেলটি রুহুল স্যার আমাকে থানা থেকে দিয়েছিলেন। এটা নিয়ে বাজাবাজি হওয়ায় পরের দিন বিকেলে তা থানায় জমা দিয়েছি।’
বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, থানার মালখানায় হেফাজতে থাকা মালামাল হস্তান্তর করার কারও কোনো সুযোগ নেই।
মোটরসাইকেলটি থানা থেকে নিয়ে যাওয়াসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ জেলায় (এসপির কার্যালয়ে) পাঠানো হয়েছে।
রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন বলেন, ঘটনাটি তিনি জানেন। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।