জামালপুরে বর ও কনে ফেলে পালালেন স্বজনেরা

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার নাংলা গ্রামে বাল্যবিবাহের আয়োজনে ইউএনওর উপস্থিতি টের পেয়ে বর ও কনে ফেলে পালালেন স্বজনেরা।
ছবি: প্রথম আলো

বিয়ে উপলক্ষে বর ও কনের বাড়িতে চলছিল জাঁকজমক অনুষ্ঠান। বিয়ের দিন উভয় পক্ষের আত্মীয়স্বজনের মধ্যে আনন্দ আয়োজনের কোনো ঘাটতি নেই। আমন্ত্রিত অতিথিদের খাওয়াদাওয়ার পর্বও শেষ। তবে কনে যে কিশোরী (১৫), তা নাকি জানতেন না কেউ। কিশোরী কনেকে সাজানোর কাজও চলছিল। হঠাৎ বিয়েবাড়িতে উপস্থিত হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। তাঁর উপস্থিতি টের পেয়ে বিয়েবাড়ি থেকে বর ও কনেকে ফেলে সবাই পালিয়ে যান। গতকাল শুক্রবার রাতে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার নাংলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

গ্রামবাসী ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নাংলা গ্রামের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রীর সঙ্গে সদর উপজেলার দেওয়ানপাড়া এলাকার মোহাম্মদ আলী পলাশ (৩০) নামের এক ব্যক্তির বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ে উপলক্ষে উভয়ের পরিবার তাঁদের স্বজনদের আমন্ত্রণ জানায়। এর আগে গতকাল হলুদসন্ধ্যাও অনুষ্ঠিত হয়। রাত আটটার দিকে বাল্যবিবাহের খবর পেয়ে ইউএনও শফিকুল ইসলাম নিজেই কনের বাড়িতে হাজির হন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বর ও কনেকে ফেলে সবাই দৌড়ে পালিয়ে যান। বন্ধ করে দেওয়া হয় বিয়ে। পরে কনের চাচাকে ডেকে নিয়ে এসে বাল্যবিবাহ আয়োজনের অপরাধে তাঁকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না দিতে তাঁর কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়।

মেলান্দহের ইউএনও শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে উভয় পক্ষের স্বজনেরা পালিয়ে যান। তবে আমরা সঠিক সময়ে গিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করেছি। বাল্যবিবাহ দেওয়া যাবে না—এ মর্মে কনের চাচার কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।’ বাল্যবিবাহের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলেও জানান তিনি।