‘জামিনে থাকা আসামি উল্টো ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিতে চেয়েছেন’

অপরাধ
প্রতীকী ছবি

দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার পর প্রায় সাড়ে তিন মাস চলে গেছে। মামলার চার আসামি জামিনে আছেন। এর পর থেকে তাঁরা প্রতিনিয়ত মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন। একজন জ্বালিয়ে দিতে চেয়েছেন ঘরবাড়ি। এমন অভিযোগ করেছেন শেরপুরের নালিতাবাড়ীর মা ও মেয়ে।

আজ সোমবার সকালে নালিতাবাড়ী প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের এমন কথা বলেছেন তাঁরা। গত বছরের অক্টোবরে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তাঁদের ধর্ষণ করা হয় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

নালিতাবাড়ী প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের ভুক্তভোগী নারী (৪০) বলেন, ঘটনার পর নানাভাবে সমাজে হেয় হচ্ছেন তাঁরা। শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়িতে উঠতে নিষেধ করেছেন। এর পর থেকে প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে বৃদ্ধ মায়ের বাড়িতে অবস্থান করছেন। বাড়ি থেকে মা-মেয়ে বাইরে বের হতে পারেন না। লোকজন নানা কথা বলে অপমান করেন।

ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেন, আসামিরা জামিন পেয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন। ওমর আলী নামের এক আসামি বাড়ি গিয়ে উল্টো মামলা তুলে না নিলে প্রাণে মেরে ফেলা ও বাড়ি ঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়েও দিতে চেয়েছেন।

অভিযোগ সম্পর্কে ওমর আলীর মুঠোফোনে আজ সোমবার একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। পরে কথা বলতে চেয়ে খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।

আরও পড়ুন

পুলিশ ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১০ অক্টোবর সন্ধ্যায় শেরপুর জেলা সদরে শ্বশুরবাড়ি থেকে নালিতাবাড়ী উপজেলায় বাবার বাড়িতে মেয়েকে (১৬) নিয়ে যাচ্ছিলেন মা (৪০)। রাত সাড়ে নয়টার দিকে অটোরিকশা থেকে গ্রামের একটি সড়কে নেমে হেঁটে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা।

অভিযোগ অনুযায়ী, এ সময় ওই গ্রামের আবদুস সাত্তার (৪৫) ও সাদেক মিয়ার (৩০) সঙ্গে মা-মেয়ের দেখা হয়। সাত্তার ও সাদেক তাঁদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে জোর করে গ্রামের মো. উসমানের (৪০) বাড়িতে নিয়ে যান। ওমর আলী (৪০) নামের আরেকজন মুঠোফোনে জাহাঙ্গীর আলম (৩০), তারা মিয়া (৩২) ও মফিজ উদ্দিন (৩০) নামের তিন ব্যক্তিকে ডেকে উসমানের বাড়িতে আনেন। পরে নারীকে বসতঘরে ও তাঁর মেয়েকে বাড়ির পেছনের বাঁশঝাড়ে নিয়ে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেন।

এ ঘটনায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ওই নারী বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা করেন। এরপর পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। চারজন বর্তমানে জামিনে আছেন।

এ নিয়ে গত ১০ অক্টোবর ‘বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণ’ ও ১১ অক্টোবর ‘মা-মেয়ে ধর্ষণের মামলায় স্বীকারোক্তির পর দুই আসামি কারাগারে’ শিরোনামে প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

আরও পড়ুন

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নালিতাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান বলেন, জামিনে থাকা চার আসামির ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। মামলা তুলে নিতে নারীকে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে থানায় কিছু জানানো হয়নি।