‘ঝালমুড়ি খাওয়া’ নিয়ে কুলিয়ারচরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৩০

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের বর্তমান ও সাবেক কাউন্সিলরের কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৩০ জন
ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর পৌরসভার একটি ওয়ার্ডের বর্তমান ও সাবেক কাউন্সিলরের কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার সকালে পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির ও সাবেক কাউন্সিলর মো. অলিউল্লাহর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের জন্য পরস্পরকে দায়ী করেছেন হুমায়ুন কবির ও অলিউল্লাহ। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অলিউল্লাহর বাড়ি কুলিয়ারচর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের নোয়াগাঁও এলাকায়। হুমায়ুন কবির একই ওয়ার্ডের রায়েরচর এলাকার বাসিন্দা। অলিউল্লাহ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।

আর হুমায়ুন দলটির সমর্থক। গত নির্বাচনে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে হুমায়ুন জয় পান। সেই থেকে তাঁদের দ্বন্দ্ব চলছিল।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় অলিউল্লাহর ছেলে মো. আলভি তাঁর চাচাতো ভাই জনি মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে নোয়াগাঁও ব্যাপারীপাড়া বাজারে ঝালমুড়ি খেতে যান। ওই বাজারে তখন আল আমিন মিয়া নামের এক ব্যক্তি ঝালমুড়ি বিক্রি করছিলেন। ঝালমুড়ি কেনার সময় আল আমিনের সঙ্গে তাঁদের দুজনের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে আল আমিনকে তাঁরা মারধর করেন। এ সময় কাউন্সিলর হুমায়ুন কবিরের কয়েকজন সমর্থক আল আমিনের পক্ষ নিয়ে আলভি ও জনির ওপর চড়াও হন। এর জের ধরে রাতেই দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আজ সকাল ১০টার পর দুই পক্ষের মধ্যে আবার সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন।

বেলা একটার দিকে হুমায়ুন কবিরের পক্ষের আহত একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। এ খবরে হুমায়ুন কবিরের সমর্থকেরা অলিউল্লাহর সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ১০টি ঘর ও ১টি দোকান ভাঙচুর করেন।

সাবেক কাউন্সিলর অলিউল্লাহর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে আহত হয়ে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ফুল মিয়া, বাদল মিয়া, অনিক মিয়া। একই হাসপাতালে হুমায়ুন কবিরের সমর্থকদের মধ্যে ভর্তি আছেন মো. কবির, সোহেল মিয়া, মো. কাদির, রিপন মিয়া, রবি মিয়া, ফজলু মিয়া ও সেলিম মিয়া। এ ছাড়া কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উভয় পক্ষের আরও ১৭ জন ভর্তি আছেন।

সাবেক কাউন্সিলর অলিউল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ঝালমুড়ি খাওয়া নিয়ে কথা–কাটাকাটি একটি অসিলামাত্র। যা হয়েছে, সবই পূর্বশত্রুতার জের ধরে। এলাকায় নিজের প্রভাব জানান দিতে হুমায়ুন কবির তাঁর সমর্থকদের বাড়িতে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান ও লুটপাট করেন।

বর্তমান কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় আল আমিনের দোকানে কয়েকজন তরুণী ঝালমুড়ি খেতে আসেন। তখন ঝালমুড়ি খাওয়ার নাম করে অলিউল্লাহর ছেলে ও ভাতিজা ওই তরুণীদের ইভ টিজিং করছিলেন। দোকানি আল আমিন তাঁদের বাধা দিলে এই দুজন তাঁকে মারধর করেন। তাঁর (হুমায়ুন) সমর্থকেরা আল আমিনকে মারধরের হাত থেকে রক্ষা করতে গিয়েছিলেন। এ জন্য অলিউল্লাহর লোকজন তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।

কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, মূলত ঝালমুড়ি খাওয়া নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। আজ আবার সংঘর্ষ হলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ রাখা হয়েছে।