টিকিট নিয়ে অনিশ্চয়তায় চট্টগ্রামের সৌদিপ্রবাসীরাও

টিকিটের জন্য অপেক্ষা। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহরে বাংলাদেশ বিমানের কার্যালয়ে
ছবি: জুয়েল শীল

সৌদিপ্রবাসী সৈয়দ হোসেনের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। সে দেশে যেতে টিকিট বুকিং দিতে চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহরের বিমান কার্যালয়ে এসেছেন দুদিন। কিন্তু বুকিং নিশ্চিত না করেই ফিরতে হয়েছে। এতে চাকরিতে ফেরত যাওয়া নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন তিনি।

কেবল সৈয়দ হোসেন নন, করোনা পরিস্থিতিতে সৌদি আরবে নতুন বিধিনিষেধের কারণে বিপাকে পড়েছেন চট্টগ্রামের অন্য প্রবাসীরাও। আজ মঙ্গলবার ষোলশহরে বাংলাদেশ বিমানের কার্যালয়ে টিকিট বুকিং দিতে ভিড় করেছিলেন তাঁদের অনেকে। তবে বুকিং দিতে না পেরে অনেককেই হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে। ছুটি শেষ হওয়ার আগে সৌদি আরবে পৌঁছানো নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে অনেকের। মূলত যাঁরা করোনা টিকার দুই ডোজ নেননি, তাঁরা বেশি অনিশ্চয়তায় রয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সকালে ষোলশহরে বিমানের কার্যালয়ে কথা হয় সাতকানিয়ার সৈয়দ হোসেনের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, জুনের প্রথম সপ্তাহে যেতে না পারলে সৌদি আরবে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে যাবে। কোয়ারেন্টিনের জন্য হোটেল ভাড়া কে করবে কীভাবে করবে, তা–ও নিশ্চিত হতে পারেননি তিনি। তিনি জানান, সাতকানিয়া থেকে এ নিয়ে দুবার বিমান অফিসে এসেছেন। তবে টিকিট বুকিং নিশ্চিত করতে পারেননি।

যাঁদের করোনার দুই ডোজ টিকা নেওয়া হয়েছে এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ১৪ দিন পার হয়েছে, তাঁদের টিকিট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

বিমানের কর্মকর্তারা জানান, সৌদিপ্রবাসীদের করোনার টিকার পূর্ণ ডোজ না নেওয়া থাকলে সাত দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এ ছাড়া হোটেলে প্রবেশের আগে এবং কোয়ারেন্টিন শেষে নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে। টিকিট নিশ্চিত করতে হলে হোটেল বুকিং করে যেতে হবে।

সৌদি সরকারের নতুন বিধিনিষেধের কারণে ২০ মে থেকে সৌদি আরবে ফ্লাইট বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ বিমান। বাংলাদেশ বিমানের জনসংযোগ বিভাগ ২৩ মে বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, কোয়ারেন্টিন প্যাকেজ নিশ্চিত করা সাপেক্ষে ২৯ মে থেকে সৌদি আরবে আবার ফ্লাইট চালু হবে। সৌদিগামী যাত্রীদের হোটেল বুকিংসহ কোয়ারেন্টিন প্যাকেজ ও বিমানের আসন সংরক্ষণের জন্য কাছের বিমান সেলস কাউন্টারের যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়। ভিসার মেয়াদের ওপর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীদের আসন সংরক্ষণ করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এই বিজ্ঞপ্তির পর বাংলাদেশ বিমানের যাত্রীরা চট্টগ্রামের ষোলশহরের কার্যালয়ে ভিড় জমাচ্ছেন।

সৌদিপ্রবাসী আবদুল হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোয়ারেন্টিনের জন্য ৬০–৭০ হাজার টাকা খরচ করতে হবে। নির্ধারিত হোটেল বুকিংসহ অনেক কিছুই এখনো স্পষ্ট জানি না। বাড়তি খরচের পাশাপাশি টিকিট বুকিং করতে না পারায় আমরা হতাশ।’
বাংলাদেশ বিমানের চট্টগ্রামের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, যাঁদের করোনার দুই ডোজ টিকা নেওয়া হয়েছে এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ১৪ দিন পার হয়েছে, তাঁদের টিকিট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তবে পূর্ণ ডোজ টিকা না নেওয়া থাকলে তাঁদের হোটেল বুকিংসহ পালনযোগ্য আনুষ্ঠানিকতা কী হবে, তা এখনো সৌদি আরব থেকে নিশ্চিত করা হয়নি। সব কটি উড়োজাহাজ সংস্থা এই অনিশ্চয়তায় আছে।