ট্রেনের হুইসেলের মধ্যেই লেভেল ক্রসিং পার হচ্ছিলেন মাইক্রোবাসচালক
ট্রেনের হুইসেল বাজছিল। তাতে কান দেননি মাইক্রোবাসের চালক। হুইসেলের মধ্যেই লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার একপর্যায়ে রেললাইনের একটি অংশে মাইক্রোবাসের চাকা আটকে যায়। এরপর চোখের পলকেই ঘটে দুর্ঘটনাটি।
রোববার দুপুরে সিলেট-ঢাকা রেলপথের মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ভাটেরা এলাকায় লেভেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মনিরুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে এসব কথা বলেছেন।
মনিরুল ইসলামের দাবি, মাইক্রোবাসটি লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার সময় তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন। তাড়াহুড়ো করে লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার আগেই মাইক্রোবাসচালককে সতর্ক করেছিলেন জানিয়ে মনিরুল বলেন, ‘ট্রেনের হুইসেল শুনে আমিও নিষেধ করছিলাম। মাইক্রোবাসটি রেলক্রসিংয়ে গিয়ে চাকা আটকে পড়ে। এ অবস্থায় ধাক্কা লাগে ট্রেনের। টেনেহিঁচড়ে ১০০ মিটার দূরে গিয়ে পড়ে মাইক্রোবাসটি। আমরা তো মনে করছি, কেউ বাঁচবে না।’
সিলেট রেলস্টেশন থেকে জানানো হয়, ঢাকা থেকে সিলেটগামী আন্তনগর পারাবত এক্সপ্রেস মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ভাটেরা পেরিয়ে ফেঞ্চুগঞ্জের দিকে দ্রুতগতিতে যাচ্ছিল। ভাটেরার কাছে হোসেনপুর নামের জায়গায় রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনার পর সিলেটের পথে রেল যোগাযোগ সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ থাকলেও দুই ঘণ্টা পর তা আবার সচল হয়।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মাইক্রোবাসে থাকা হতাহত সবাই একই পরিবারের। সিলেট নগরীর লোহারপাড়া এলাকার বাসিন্দা ফরিদ উদ্দিন (৫২) মারা যান, সঙ্গে তাঁর ভাতিজা চার বছরের শিশু আফিফ উদ্দিনও।
আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন নিহত ফরিদ উদ্দিনের বড় মেয়ে রেজওয়ানা উদ্দিন (২৪), ছোট ছেলে লাবিব উদ্দিন (৬), ফরিদ উদ্দিনের ভাই কামাল উদ্দিন (৩৫), স্ত্রী রুমি বেগম (৩৪), কামালের বোন লিলি বেগম (৫৫) ও তাঁর মেয়ে রাবেয়া বেগম (২৪)।
নিহত ফরিদ উদ্দিনের বড় মেয়ে রেজওয়ানা উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, দুটি মাইক্রোবাসে করে তাঁরা ভাটেরায় এক আত্মীয়ের বিয়েতে যাচ্ছিলেন। একটি মাইক্রোবাস আগে ছিল। সামনের মাইক্রোবাসটিকে অনুসরণ করতে গিয়ে তাড়াহুড়োয় দুর্ঘটনাটি ঘটে।