ঠাকুরগাঁওয়ে মাটি খুঁড়ে মিলল ২৭টি বন্দুক ও অসংখ্য গুলি

উদ্ধার হওয়া বন্দুক ও গুলিগুলো মুক্তিযুদ্ধের সময় মাটির নিচে চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে
ছবি: প্রথম আলো

বাড়ি নির্মাণের জন্য মাটি খুঁড়তে গিয়ে মাটির নিচ থেকে বেরিয়ে এল একটি পরিত্যক্ত বাক্স। কোদালের আঘাত পড়তেই ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে কয়েকটি বন্দুকের নল। এরপর শ্রমিকেরা বাক্স খুলে ভেতর থেকে একে একে ২৭টি বন্দুক আর অসংখ্য গুলি বের করে আনেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের আশ্রমপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বাক্সটি মুক্তিযুদ্ধের সময় মাটির নিচে চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল।

পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের আশ্রমপাড়া এলাকায় বাড়ি নির্মাণের জন্য পুরোনো বাড়ির ভিত্তির ইট মাটি খুঁড়ে বের করছিলেন শ্রমিকেরা। বেলা দুইটার দিকে শ্রমিকদের কোদালের সঙ্গে ভারী কিছু আটকে যায়। পরে কৌতূহলী শ্রমিকেরা মাটি সরিয়ে একটি বাক্স বের করেন। পরে ওই বাক্স থেকে পলিথিনে মোড়ানো বন্দুক ও গুলি উদ্ধার করেন তাঁরা। পরে স্থানীয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বন্দুক ও গুলি উদ্ধার করে।

আশ্রমপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তাঁর বাবা ১৯৮২ সালে সাইফুল নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে ঘরসহ জমিটি কিনেন। গত বছর তিনি বাড়ির একাংশ বিক্রি করে দেন। সেই অংশে বাড়ি নির্মাণের জন্য মাটির নিচে থাকা ইট সরিয়ে নিচ্ছিলেন শ্রমিকেরা। আজ শ্রমিকেরা মাটির নিচের একটি বাক্স থেকে রাইফেল ও গুলির সন্ধান পান।

ওই এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা নাজমুল হক বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় আশ্রমপাড়া মহল্লা এলাকায় উর্দুভাষীদের শক্ত অবস্থান ছিল। যেখানে বাক্সটি পাওয়া গেছে, সেটাও এক উর্দুভাষীরই জমি ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, স্বাধীনতাযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর ব্যবহারের জন্য এই বন্দুক ও গুলি মজুত করা হয়েছিল।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভিরুল ইসলাম বলেন, ওই বাক্স থেকে ২৭টি বন্দুক পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২৪টি থ্রি নট থ্রি ও বাকি ৩টি এসএলআর (সেল্ফ লোডিং রাইফেল)।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলোয় মরিচা ধরে গেছে। এর মধ্যে কিছু ভেঙেও গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সেগুলো অনেক পুরোনো। এই অস্ত্রগুলো কীভাবে এখানে এলো, এটা তদন্তের বিষয়। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। জব্দ তালিকা করার পর অস্ত্র ও গুলির প্রকৃত সংখ্যা জানাতে পারব।’