ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

পাবনায় গণপূর্ত বিভাগের কার্যালয়ে ঢুকে এবার বিভাগীয় উপসহকারী প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় ওই প্রকৌশলী পাবনা সদর থানায় লিখিত এজাহার দিয়েছেন।

লাঞ্ছনার শিকার গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলীর নাম আবদুস সাত্তার। আর ওই ঠিকাদার হলেন নূর কনস্ট্রাকশনের মালিক মোখলেসুর রহমান।

এজাহারে আবদুস সাত্তার উল্লেখ করেন, ঠিকাদার মোখলেসুর রহমান দুপুর ১২টার দিকে গণপূর্ত কার্যালয়ে হাজির হন। এ সময় নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয়ে না থাকায় তিনি প্রকৌশলী আবদুস সাত্তারের কক্ষে ঢোকেন। দুজনের কথার একপর্যায়ে আবদুস সাত্তার ঠিকাদার মোখলেসুর রহমানকে তাঁর একটি কাজের বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন। তিনি কাজটি নির্ধারিত সময়ে কেন শেষ করছেন না এ বিষয়ে তাগিদও দেন। এতে মোখলেসুর রহমান ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি প্রকৌশলীকে গালাগালসহ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।

প্রকৌশলী আবদুস সাত্তারের অভিযোগের সূত্র ধরে গণপূর্ত বিভাগের তিনজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানান, আবদুস সাত্তারের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই ঠিকাদার উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে প্রকৌশলী আবদুস সাত্তারকে কিল-ঘুষি দেন। এ সময় তিনি চিৎকার শুরু করলে সহকর্মীরা এগিয়ে যান। পরে ওই ঠিকাদার গালিগালাজ করতে করতে কার্যালয় ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে আবদুস সাত্তার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি শুধু তাঁকে (ঠিকাদারকে) নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে বলেছিলাম। এটুকুতেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে কার্যালয়ের মধ্যেই লাঞ্ছিত করেছেন। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী থানায় এজাহার দিয়েছি। কার্যালয়ে লাঞ্ছিত হওয়ার বিচার দাবি করছি।’

গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিম বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি কার্যালয়ে ছিলাম না। বিষয়টি জানার পরই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোখলেসুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে বন্ধ পাওয়া গেছে। শহরের ছাতিয়ানি এলাকায় তাঁর নিজ বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নেওয়া হয়। তবে ভেতর থেকে বলা হয়, তিনি বাড়িতে নেই।

জানতে চাইলে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা প্রকৌশলীর এজাহারটি গ্রহণ করেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এর আগে গত ৬ জুন দুপুরে লোকজন নিয়ে গণপূর্ত বিভাগের পাবনা কার্যালয়ে ঢোকেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ফরুক হোসেন। তাঁর পেছনে শটগান হাতে মহড়া দেন পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম আর খান ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালু। পরবর্তী সময়ে ভবনে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার একটি ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনার ঝড় ওঠে। কিছু ঠিকাদার অভিযোগ করেন, ঠিকাদারি কাজের সুবিধা পেতেই আওয়ামী লীগ নেতারা এই মহড়া দিয়েছেন।