ডিজিটাল আইনের মামলায় স্বীকারোক্তি দিলেন ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল

‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানী
ছবি: সংগৃহীত

আলোচিত ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানী গাজীপুরের গাছা থানায় র‍্যাবের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গাজীপুর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার শুভাশীষ ধর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আজ শুক্রবার রফিকুল ইসলাম মাদানীকে গাজীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ নাজমুন নাহারের আদালতে হাজির করা হলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, মাদানীকে গত ৭ এপ্রিল নেত্রকোনায় তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। আটককালে তাঁর কাছ থেকে চারটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়। এসব মুঠোফোনে বেশ কিছু বিদেশি পর্নো ভিডিও পাওয়া যায়। পরদিন তাঁকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানায় হস্তান্তর করে র‍্যাব। পরে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। র‍্যাব-১ মামলাটির তদন্ত করে।

ওসি আরও জানান, মামলার এজাহারে রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী উস্কানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি আদালতে এসব অভিযোগ স্বীকার করেছেন।

মামলার এজাহারে রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী উস্কানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি আদালতে এসব অভিযোগ স্বীকার করেছেন।
ইসমাইল হোসেন, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), গাছা থানা

গাজীপুর মহানগরীর বোর্ডবাজারের কলমেশ্বর এলাকায় একটি কারখানা চত্বরে গত ১০ ফেব্রুয়ারি এক ওয়াজ মাহফিলে সরকারকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিয়েছিলেন রফিকুল ইসলাম মাদানী। ওই ঘটনায় ৭ এপ্রিল দিবাগত রাত সোয়া দুইটার দিকে গাছা থানায় র‍্যাব-১-এর ডিএডি আবদুল খালেক বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই মামলায় রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৮ ও ৩১ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। যেখানে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অনুভূতিতে আঘাত করে আক্রমণাত্মক ও মিথ্যা ভীতি প্রদর্শন, তথ্য–উপাত্ত ইলেকট্রনিকস বিন্যাসে প্রকাশ ও সম্প্রচার করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর অপরাধের কথা বলা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে গাজীপুরের গাছা ও বাসন থানা ছাড়াও ঢাকার তেজগাঁও থানায় মামলা রয়েছে।

আরও পড়ুন

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরুদ্ধে গত ২৫ মার্চ বিক্ষোভকালে ঢাকার মতিঝিল এলাকা থেকে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে আটক করেছিল পুলিশ। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনার মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়নি। ওই সময় বিক্ষোভ ও হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছিল। রফিকুল ইসলাম মাদানী ওয়াজে সহিংসতার উসকানি ছিল বলে দাবি করেছে র‍্যাব।

রফিকুল ইসলাম মাদানীর বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার লেটিরকান্দা গ্রামে। ইসলামি দলগুলোর বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় রফিকুলের বয়স ২৭ বছর হলেও আকার-আকৃতির জন্য তাঁকে ‘শিশুবক্তা’ বলে ডাকেন তাঁর ভক্তরা।