ঢাকা থেকে বেতাগীর পথে হাদিসুরের লাশ, বাড়িতে আহাজারি

হাদিসুরের স্বজনেরা তাঁর লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। আজ দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে
ছবি: দীপু মালাকার

ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’তে রকেট হামলায় নিহত নৌ প্রকৌশলী হাদিসুর রহমানের লাশ অ্যাম্বুলেন্সে তাঁর গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১টার দিকে হাদিসুরের লাশ নিয়ে তাঁর গ্রামের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার উদ্দেশে রওনা হন তাঁর স্বজনেরা।

এর আগে আজ দুপুর ১২টা ৬ মিনিটে তুর্কি এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে হাদিসুরের লাশ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। হাদিসুরের ছোট ভাই গোলাম মাওলা লাশ গ্রহণ করেন। ছেলের লাশ দেশে আসার খবরে মা-বাবার আহাজারিতে হাদিসুরের গ্রামের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

হাদিসুরের মেজ ভাই তারিকুল ইসলাম বিলাপ করে বলেন, ‘এবার যাওয়ার সময় আমি আমার ভাইকে আগায় দিয়ে আসছিলাম। কিন্তু আমি আর আমার ভাইকে আনতে পারলাম না।’

নিহত ব্যক্তির চাচা ও বেতাগী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান বলেন, আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জানাজা হবে। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে দাদা-দাদির কবরের পাশে হাদিসুরকে দাফন করা হবে।

ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় হাদিসুরের মা–বাবা
ছবি: প্রথম আলো

স্বজনেরা জানান, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর অলভিয়া বন্দরে আটকে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধি। সেখানে নোঙর করা অবস্থায় ২ মার্চ ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকে থাকা এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে হামলায় নিহত হন হাদিসুর রহমান। এরপর বন্দরের আশপাশ এলাকায় বসবাসকারী বাংলাদেশের নাগরিকদের সহায়তায় ৩ মার্চ জাহাজে থাকা ২৮ নাবিককে উদ্ধার করে তাঁদের ইউক্রেনের বাংকারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

হাদিসুরের গ্রামের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে
ছবি: প্রথম আলো

এরপর বন্দরটির আশপাশ এলাকায় বসবাসকারী বাংলাদেশের নাগরিকদের সহায়তায় ৩ মার্চ জাহাজে থাকা ২৮ নাবিককে উদ্ধার করে তাঁদের ইউক্রেনের বাংকারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ৯ মার্চ ২৮ নাবিককে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। জাহাজটির ২৯ জন নাবিক ও প্রকৌশলীর মধ্যে ২৮ জন নিরাপদে দেশে ফিরলেও হাদিসুরকে ফিরতে হয়েছে লাশ হয়ে।

মাকসুদুর রহমান বলেন, হাদিসুর ২০১৪ সালে সিঙ্গাপুরের একটি জাহাজে নৌ প্রকৌশলী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০১৮ সালে এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে হাসিদুর যোগ দেন। হাদিসুর রহমান বিনয়ী প্রকৃতির লোক ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে পুরো গ্রাম এখন শোকাহত।

আরও পড়ুন