তিনজনকে জীবিত উদ্ধার করা সমীরের শিশুসন্তানের লাশ পাওয়া গেছে

সন্দ্বীপে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় নিখোঁজ তিন শিশুর মধ্যে শুক্রবার দুইজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সকালে সন্দ্বীপের উড়িরচরের উপকূলে
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপকূলে স্পিডবোটডুবির ঘটনায় তিনজনকে জীবিত উদ্ধার করা সমীর হোসেনের শিশুসন্তান মনির হোসেন ওরফে সৈকতের (১০) লাশ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

আজ শুক্রবার বিকেল পাঁচটার দিকে সন্দ্বীপের বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন উড়িরচর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। সমীর হোসেন উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

ফায়ার সার্ভিসের সন্দ্বীপ স্টেশন কর্মকর্তা কিরিটি রঞ্জন বড়ুয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের সদস্যরা লাশটি উদ্ধার করেছেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত লাশ নিয়ে গুপ্তছড়া ঘাটে পৌঁছাননি তাঁরা।

আরও পড়ুন

গত বুধবার সকালে সন্দ্বীপ উপকূলে ঝড়ের কবলে পড়ে এ স্পিডবোটডুবির ঘটনায় নিখোঁজ সন্তান মনিরকে খুঁজতে গিয়ে একে একে তিনযাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করেন সমীর হোসেন। কিন্তু নিজের ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি।

এ নিয়ে নিখোঁজ তিন শিশুর মধ্যে শুক্রবার দুজনের লাশ উদ্ধার হলো। এর আগে সকাল নয়টার দিকে উড়িরচরে একটি ঝোপে আটকে ছিল ওমানপ্রবাসী মো. আলাউদ্দিন জমজ দুই শিশুকন্যার মধ্যে একজনের লাশ। জেলেরা লাশটি দেখতে পেয়ে উপজেলা প্রশাসনকে খবর দেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে আট বছরের শিশু আলিফার লাশটি উদ্ধার করে। ওই শিশুটির মা পান্না বেগম এসে লাশ শনাক্ত করেন।

এ ছাড়া বুধবার দুর্ঘটনার পরপরই আলাউদ্দিন–পান্না দম্পতির বড় মেয়ে নুসরাত জাহানের (১৩) লাশ উদ্ধার করা হয়। এখনো নিখোঁজ রয়েছে আলিফার জমজ বোন আদিবা।

আরও পড়ুন

এদিকে তিন মেয়েকে হারিয়ে পাগলপ্রায় আলাউদ্দিন–পান্না দম্পতি। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আলাউদ্দিন দেশে আসার জন্য ছটফট করতে থাকেন। আজ দেশে ফেরেন। কিন্তু তিনি বাড়ি পৌঁছার আগেই মেয়ে আলিফার লাশ দাফন কাজ হয়ে যায়। দুপুরে আলাউদ্দিন গুপ্তছড়া ঘাটে পৌঁছালে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। তাঁর আহাজারিতে আশপাশে থাকা লোকজনেরও চোখ আর্দ্র হয়ে ওঠে।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্র জানায়, নিখোঁজ শিশুদের উদ্ধারে আজ সকাল সাতটা থেকে তৃতীয় দিনের মতো অভিযান শুরু করে উদ্ধারকারী দল। উদ্ধারকাজে স্থানীয় উদ্ধারকারী দলের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর ডুবুরি দল অংশ নেয়। সকাল সাতটা থেকে গুপ্তছড়া ঘাটে এসে উদ্ধারকাজ তদারক করেন সন্দ্বীপের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসা।

এদিকে স্পিডবোটডুবির ঘটনায় আজ বিকেলে ঘাটের ইজারাদার ও স্পিডবোটচালককে গ্রেপ্তার ও শাস্তি এবং সন্দ্বীপে যাতায়াত নিরাপদ করার দাবিতে উপজেলা কমপ্লেক্স এলাকায় মানববন্ধন করেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। এ সময় একটি বিক্ষোভ মিছিলও বের করেন তাঁরা।

আরও পড়ুন