বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রায় আড়াই শ গ্রাহকের আমানতের তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আলতাফনগর প্রগতি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি নামের প্রতিষ্ঠানটি থেকে অর্থ ফেরতের দাবিতে আজ সোমবার মানববন্ধন করেছেন গ্রাহকেরা।
প্রতারিত গ্রাহকেরা বলছেন, দুপচাঁচিয়া উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের আলতাফনগর বন্দরে প্রায় এক দশক আগে বালুকাপাড়া গ্রামের মাহফুজার রহমান ওরফে দুলাল নামের এক ব্যক্তি প্রগতি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে এলাকার শত শত গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করেন। মাহফুজার রহমান সংস্থার সভাপতি এবং তাঁর বড় ভাই রেজাউল করিম সম্পাদক। এভাবে ১০ বছরে আড়াই শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে তিন কোটির বেশি টাকার আমানত হাতিয়ে নেয় সংস্থাটি।
ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে লাভসহ আমানত ফেরতের কথা থাকলেও মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর টাকা নিতে গেলে সংস্থার লোকজন টালবাহানা শুরু করে। আমানতের টাকা ফেরতের জন্য গ্রাহকেরা চাপ দিলে গত ১৫ জানুয়ারি মাহফুজার রহমান, রেজাউল করিমসহ অন্যরা সমিতির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান। এখন আমানতের টাকা ফেরত পেতে প্রতিদিনই গ্রাহকেরা সংস্থার বন্ধ কার্যালয়ের সামনে ধরনা দিচ্ছেন।
টাকা ফেরতের দাবিতে আজ সোমবার আলতাফনগর বন্দরে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রতারণার শিকার গ্রাহকেরা অংশ নেন। এতে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের মধ্যে আবদুর রাজ্জাক, বুলু মিয়া, মিজানুর রহমান, বাচ্চু প্রামাণিক, জুলেখা বেগম, হালিমা আক্তার, রওশন আরা বিবি প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ভুক্তভোগীরা বলেন, প্রায় আড়াই শ গ্রাহকের তিন কোটি টাকা জামানত হাতিয়ে নিয়ে দুই ভাই লাপাত্তা। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন, থানা–পুলিশ ছাড়াও সমাজসেবা অধিদপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে কোনো প্রতিকার মেলেনি।
দুপচাঁচিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন জিহাদী প্রথম আলোকে বলেন, প্রতারিত গ্রাহকদের কাছ থেকে রোববার লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনে প্রতারণায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।