ত্বকী হত্যায় স্বীকারোক্তি দেওয়া আসামি শওকতের আত্মসমর্পণ

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন সুলতান শওকত ওরফে ভ্রমর। স্বীকারোক্তির এক বছর পর জামিনে বেরিয়ে তিনি বিদেশে চলে যান। পরে আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আজ বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাওসার আলমের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন শওকত। শুনানি শেষে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

সুলতান শওকত নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী আজমেরী ওসমানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর সুলতান শওকত আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সেখানে তিনি বলেন, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের এক বছরের মাথায় ২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাবের তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, আজমেরী ওসমানসহ ১১ জন মিলে ত্বকী হত্যায় অংশ নেন।

ত্বকী হত্যা মামলার আইনজীবী প্রদীপ ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, সুলতান শওকত উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে ২০১৪ সালে বিদেশে পালিয়ে যান। পরে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাঁকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেন। দীর্ঘদিন পর আজ তিনি আদালতে জামিনের জন্য আত্মসমর্পণ করেছেন।

নিহত ত্বকীর বাবা এবং ওই হত্যা মামলার বাদী রফিউর রাব্বি প্রথম আলোকে বলেন, সুলতান শওকত স্বঘোষিত হত্যাকারী হওয়ার পরও অভিযোগপত্র না দেওয়ায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বিদেশে পালাতে পেরেছেন। ৮ বছরেও অভিযোগপত্র দাখিল না করায় ত্বকী হত্যার বিচারটি এখন রাষ্ট্রের বিচারহীনতার নগ্ন প্রতিফলন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি অতিদ্রুত র‌্যাবের উদ্‌ঘাটিত তথ্য অনুযায়ী আজমেরী ওসমানসহ অন্যদের গ্রেপ্তার করে বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুর দাবি জানান।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় ত্বকী। দুদিন পর শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী শাখা খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।