দুই চোরকে আগাম টাকা দিয়ে রাখতেন এক সোনা ব্যবসায়ী
চোরের দলকে আগাম টাকা দিয়ে রাখতেন এক সোনা ব্যবসায়ী। চোরের দল রিকশাচালক ও যাত্রী সেজে লোকজন নেই, এমন খালি বাসায় চুরি করত। সেখান থেকে যে সোনাদানা পেত, তা বাজারমূল্যের চেয়ে অর্ধেক মূল্যে ওই সোনা ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করত।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নগরের ফিরিঙ্গীবাজার থেকে মো. শরীফ ও আবদুল জলিল নামের দুই চোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোনা ব্যবসায়ী প্রণব ধরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ এসব তথ্য জানতে পারে।
চলতি বছরের ৩ এপ্রিল নগরের কোতোয়ালি থানার নন্দনকানন এলাকার একটি বাসার জানালার গ্রিল কেটে, ১৩ মে সিরাজদৌলা রোড এলাকার একটি বাসায় এবং ১৩ মার্চ রহমতগঞ্জ এলাকার একটি বাসার জানালার গ্রিল কেটে মালামাল চুরি করে চোরের দল। এই তিন ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় চুরির ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে পুলিশ চোরের দলকে খুঁজতে থাকে। গত বৃহস্পতিবার দুজনকে রিকশা নিয়ে ঘুরতে দেখে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা ওই তিন ঘটনায় চুরিতে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
৮ বছরে ৭০০ চুরি
গ্রেপ্তার শরীফ নগরের চকবাজার ও খুলশী থানায় চুরির ঘটনার মামলায় ইতিপূর্বে পাঁচবার, আবদুল জলিল চকবাজার থানার মামলায় দুবার গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গিয়েছিলেন। জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও জড়িয়ে পড়েন চুরিতে। এ পর্যন্ত আট বছরে তাঁরা প্রায় ৭০০ চুরি করেছেন।
যেভাবে চুরি করেন
গ্রেপ্তার দুই চোর পুলিশকে জানান, রিকশাচালক সেজে দিনে কিংবা রাতে তাঁরা নগরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ান। যেসব বাড়িতে লোকজন থাকে না কিংবা সন্ধ্যার পর বাতি জ্বলে না, সেসব বাসাকে লক্ষ্য করে চুরি করেন। একজন ঘরে ঢোকেন, আরেকজন রিকশা নিয়ে বাইরে পাহারা দেন। একসময় তাঁরা সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন। এখন রিকশা নিয়ে ঘোরেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, নগরের হাজারী লেনে সোনা ব্যবসায়ী প্রণব ধর চোরের দলকে আগাম টাকা দিয়ে রাখেন। এককথায় তিনি চোরের কাছে বিনিয়োগ করেন। চুরি শেষে চোরেরা মালামালগুলো তাঁর কাছে বিক্রি করেন। ৭০ হাজার টাকার সোনা ৩৫ হাজার টাকায় কিনে নেন। পরে বাজারে বেশি দামে বিক্রি করেন।