দৌলতদিয়ায় ঘরমুখী মানুষকে হয়রানি করলে তার ঈদ হবে জেলখানায়: পুলিশ সুপার

আজ সকাল থেকেই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঘরমুখী যাত্রীর চাপ বাড়তে শুরু করেছে। আজ দুপুরে দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটে
ছবি: প্রথম আলো

পরিবার আর প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করতে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। এ কারণে সকাল থেকে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এদিকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ঈদযাত্রায় কোনো হয়রানির ঘটনা ঘটলে জড়িত বক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান।

গতকাল বুধবার বিকেলে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট টার্মিনালে আয়োজিত সচেতনতামূলক বিট পুলিশিং সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পুলিশ সুপার বলেন, ‘মানুষের নির্বিঘ্নে ঘরে ফেরার জন্য আমরা সর্বোচ্চ শ্রম ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছি। এর ওপর আমাদের জেলার সুনাম জড়িত। ঈদে এখানে কোনো ধরনের দালাল, মলম পার্টি বা ছিনতাইকারী থাকবে না। কোনো যাত্রীকে কেউ হয়রানি করলে বা কারও কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিলে তার ঈদ হবে জেলখানায়; সে যে–ই হোক, যত বড় মানুষই হোক। আমরা যাত্রীদের সেবার জন্য কয়েক স্তরে কঠোর নিরাপত্তাবলয় তৈরি করেছি।’

এদিকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজধানী থেকে আসা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঘরমুখী যাত্রী ও যানবাহনের বাড়তে শুরু করেছে। দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে গেছে, বড় গাড়ির তুলনায় ব্যক্তিগত গাড়ি ও মাইক্রোবাসের চাপ তুলনামূলক বেশি ছিল। পাটুরিয়া ঘাট থেকে নদী পাড়ি দিয়ে আসা প্রতিটি ফেরিতে ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ দেখা গেছে।

এ ছাড়া ঘাটে নদী পারের অপেক্ষায় ঢাকামুখী যাত্রীবাহী শতাধিক বাস ও পণ্যবাহী বেশ কিছু ট্রাকের সারি দেখা গেছে। ফেরির নাগাল পেতে যাত্রীবাহী বাসগুলোকে দু–তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, ঈদের পাঁচ দিন আগে থেকে পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার বন্ধ রাখার কথা থাকলেও আজও বেশ কিছু পণ্যবাহী গাড়ি দেখা গেছে। তবে গত কয়েক দিনের তুলনায় পণ্যবাহী গাড়ির চাপ অনেক কম ছিল।

ফেরির নাগাল পেতে যাত্রীবাহী বাসগুলোকে দু–তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে জানা গেছে
ছবি: প্রথম আলো

সাভারের নবীনগর থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীর পাংশায় যাচ্ছেন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী শাহ ফরিদ। তিনি বলেন, ‘ঈদের দুই দিন দিন আগে তো ব্যাপক চাপ পড়বে। সে জন্য আগেই হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে পরিবার নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।’

গাজীপুর থেকে গ্রামের বাড়ি যশোরের শার্শা যাচ্ছেন গৃহবধূ শারমিন আক্তার। তাঁর সঙ্গে রয়েছে ছোট দুই সন্তান। দৌলতদিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাটে আলাপকালে তিনি বলেন, তাঁর স্বামী একটি কারখানায় চাকরি করেন। ঈদের ছুটি পেতে আরও দুই দিন লাগবে। সে জন্য তিনি দুই সন্তানকে নিয়ে আগেভাগে বাড়ি চলে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী অনেক পরিবারই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। যাত্রীবাহী বাসের চেয়ে ছোট গাড়ির চাপ বেশি। তবে কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই তারা নদী পার হতে পারছে। বর্তমানে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় মিলে ২০টি ফেরি চলাচল করছে।