দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন, প্রথম স্ত্রীকে হত্যার মামলা চলমান

শাহীন মণ্ডলের (৩৬) বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে করা মামলা বিচারাধীন। এ অবস্থায় দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে তাঁকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।

নাটোরের সিনিয়র দায়রা জজ শরীফ উদ্দীন আজ মঙ্গলবার দুপুরে এ দণ্ডাদেশ দেন। শাহীন মণ্ডল নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা সদরের কালিকাপুর গ্রামের রইচ উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে।

কারাগারে থাকা আসামি শাহীন মণ্ডলকে দুপুর ১২টায় দায়রা জজ আদালতের এজলাস কক্ষে হাজির করা হয়। এর পরপরই বিচারক আদালতে বসেন। তিনি আসামির উপস্থিতিতে রায় পড়ে শোনান। বিচারক বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আনা আসামির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় স্ত্রী চম্পা খাতুনকে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হলো। অর্থদণ্ড পরিশোধে ব্যর্থ হলে আসামিকে আরও এক মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। পরে শাহীন মণ্ডলকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, চম্পা খাতুন বড়াইগ্রাম উপজেলা সদরের কালিকাপুর গ্রামের আফছার মিয়াজীর মেয়ে ছিলেন। ঘটনার ছয় মাস আগে তাঁর সঙ্গে আসামি শাহীন মণ্ডলের দ্বিতীয় বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের টাকার জন্য তাঁদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি সকালে আফছার আলী মুঠোফোনে তাঁর মেয়ের মৃত্যুর খবর পান। তিনি মেয়ের বাড়িতে গিয়ে গলাকাটা অবস্থায় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে এ ঘটনায় তিনি শাহীন মণ্ডল, তাঁর মা-বাবাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত শেষে বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এমরান হোসেন আসামি শাহীন মণ্ডলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (ক) ধারায় অভিযোগপত্র জমা দেন।

দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আরিফুর রহমান সরকার বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে পৃথক একটি মামলা বর্তমানে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। শিগগিরই ওই মামলারও রায় ঘোষণা করা হতে পারে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান বলেন, মামলায় কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলেন না। রায়ে তাঁরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তাঁর মক্কেল রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। আসামির বিরুদ্ধে অন্য একটি হত্যা মামলা চালু থাকার বিষয়টিও তিনি নিশ্চিত করেন।