ধর্মপাশায় বাঁধ চুইয়ে ঢুকছে পানি, ঝুঁকিতে হাওরের ফসল

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় পাহাড়ি ঢলের চাপে ধসে গেছে একটি ফসল রক্ষা বাঁধ। ঝুঁকিতে পড়েছে হাওরের ফসল। ছবিটি উপজেলার গুরমা বর্ধিতাংশ হাওরের বাগমারা এলাকা থেকে তোলা
ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার চারটি হাওরের ফসল রক্ষার নয়টি বাঁধের বেশ কিছু জায়গা ধসে গেছে। এ ছাড়া কিছু বাঁধের নিচ দিয়ে চুইয়ে পানি ঢুকছে। এ অবস্থায় উপজেলার ধানকুনিয়া, সোনামড়ল, গুরমা ও গুরমা বর্ধিতাংশ—এই চার হাওরের ৯ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমির বোরো ফসল ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

উপজেলা প্রশাসন ও এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার চন্দ্র সোনার থাল, ধানকুনিয়া, ঘোড়াডোবা, জয়ধনা, সোনামড়ল, রুইবিল, গুরমা, গুরমা বর্ধিতাংশ, কাইলানী হাওর সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনে। হাওরগুলোর ফসল রক্ষা বাঁধ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সংখ্যা ১৫৮। সেখানে কাজের বিপরীতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৩০ কোটি ৩৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ৯টি হাওরের মধ্যে উপজেলার ধানকুনিয়া হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের ৩ নম্বর প্রকল্পকাজ, সোনামড়ল হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের ২৮, ৪২ ও ৪৮ নম্বর প্রকল্পকাজ, গুরমা হাওরের ১১৬, ১১৭, ১২৩ ও ১২০ নম্বর প্রকল্পকাজ এবং গুরমা বর্ধিতাংশ হাওরের শালদিঘা ফসলরক্ষা বাঁধের ১২৬ নম্বর প্রকল্পকাজের নিচ দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে পানি ঢুকছে। এ ছাড়া বাঁধগুলোর বেশ কিছু জায়গা ধসে গেছে।

চার হাওরের এই ৯টি বাঁধের এক পাশে নদী ও অন্য পাশে বড় গর্ত থাকায় হাওরের ৯ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমির বোরো ধান ঝুঁকির মধ্যে আছে বলে জানান সুনামগঞ্জ পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী এবং উপজেলা কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণ কমিটির সদস্যসচিব মো. ইমরান হোসেন। তাঁর দাবি, এসব ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে পিআইসির কাজ চলমান। তিনি আশা করছেন, কোনো সমস্যা হবে না।

গুরমা হাওরের ১১৬ নম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি আমির হোসেন বলেন, বাঁধের এক পাশে বোয়ালা নদী ও অন্য পাশে বড় কুড় (গর্ত) আছে। তাই পানি চুইয়ে চুইয়ে পানি ঢুকছে। তা ছাড়া বাঁধের কিছু জায়গায় দুই দিন আগে ধসে যায়। শ্রমিকদের দিয়ে বাঁশ ও বস্তা ফেলে ধসে যাওয়া স্থানটি মেরামত করাসহ বাঁধ মজবুত করা হয়েছে। কোনো সমস্যা হবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

আরও পড়ুন

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, এখন পানি কমছে। ৪ হাওরে মোট ৯ হাজার ৯৬০ হেক্টর বোরো জমি আছে। চারটি হাওরের নয়টি বাঁধ অনেকটাই ঝুঁকির মধ্যে আছে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত উপজেলার ২ হাজার ৫১৭ হেক্টর বোরো জমির ধান কাটা হয়েছে। এখন পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনতাসির হাসান প্রথম আলোকে বলেন, হাওরের ফসল রক্ষায় ১০ দিন ধরে তাঁরা দিনরাত বাঁধে গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। বাঁধ টেকাতে যা যা করা দরকার, তা–ই করছেন। কৃষকদের সোনার ফসল রক্ষায় তাঁদের সব রকম প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।